অন্ধ্রপ্রদেশের ওঙ্গোলের সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ এনেছে এক রোগীর স্বজনেরা। হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় মারা যায় তাদের আত্মীয়। পরে দেখা যায়, হাসপাতালের মধ্যেই সেই রোগীর মৃতদেহ খুবলে খাচ্ছে কুকুর!
ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, এই ঘটনায় তড়িঘড়ি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও যে প্রশ্নটা উঠছে, হাসপাতাল চত্বরের মধ্যে করোনা রোগীর মৃতদেহ এভাবে পড়ে থাকছে। অথচ কর্তৃপক্ষ কীভাবে এতটা উদাসীন হতে পারে?
রাজীব গান্ধী ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (আরআইএমএস) হাসপাতাল চত্বরের একটি শেড চালচুলোহীন দুস্থ, ভবঘুরেরা রাতের বেলায় আশ্রয় নেন। সেখানেই পড়েছিল কভিড আক্রান্ত রোগীর মৃতদেহ।
সোমবার হাসপাতালের এক নিরাপত্তারক্ষী বিষয়টি প্রথমে খেয়াল করেন। দেখেন পথ কুকুররা একটি মৃতদেহ নিয়ে খাবলা-খাবলি করছে। তিনি লাঠি হাতে তাড়া করে কুকুরগুলোকে তাড়িয়ে দেন। ততক্ষণে অবশ্য মৃত ব্যক্তির কানের একাংশ ছিঁড়ে নিয়েছে কুকুর, থাবায় বিকৃত হয় মুখের একাধিক অংশ।
খোঁজ করে নিরাপত্তারক্ষী জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। নাম কান্তা রাও। বাড়ি প্রকাশম জেলার বিত্রগুন্তা গ্রামে। ঘটনার অনেকক্ষণ আগেই তিনি মারা গিয়েছেন। বিষয়টি সামনে আসার পর মৃতের পরিবার ক্ষোভে ফেটে পড়ে। হাসপাতাল অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তও করে। কিন্তু, প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, কান্তা রাওকে হাসপাতালে ভর্তিই করা হয়নি।
মৃতের পরিবারের দাবি নস্যাত্ করে আরআইএমএস-এর সুপার ডাক্তার শ্রীরামুলু জানান, ৫ আগস্ট হাসপাতালে আনা হয়েছিল কান্তা রাওকে। কিন্তু হাসপাতালে রোগী হিসেবে তাকে নথিভুক্ত করা হয়নি। হাসপাতাল কেন কান্তা রাওকে ভর্তি নেয়নি বা কেন কভিড আক্রান্ত একজন রোগীকে পাঁচ দিন বিনা চিকিৎসায় শেডের মধ্যে কাটাতে হলো— এ সব প্রশ্নের সদুত্তর সুপার দিতে পারেননি। সুপারের বক্তব্য, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
হাসপাতাল সুপার আরও জানান, সোমবার হাসপাতালের এক নিরাপত্তারক্ষী ও কয়েকজন রোগী খেয়াল করেন, শেডের নিচে শুয়ে থাকা এক ব্যক্তির ওপর কুকুর হামলা করেছে। তারাই কুকুরগুলোকে তাড়ায়। তখনই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন।
অন্ধ্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতা চন্দ্রবাবু নাইডু সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার ভিডিও শেয়ার করেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বলেন, এই ঘটনায় মানবিক মর্যাদা লঙ্ঘিত হয়েছে