করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধের মধ্যেই কিছু দেশ স্কুল-কলেজ খুলে দিচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যাতে লকডাউনের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক সংকটে না পড়ে তাই এমন পদক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, শিশুদের শরীরে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে সক্রিয় থাকে করোনাভাইরাস। শুধু তাই নয়, সেই ভাইরাসের সংক্রমণ-ক্ষমতা থাকে খুব বেশি। ফলে দেশে দেশে স্কুল খুলে যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক মিডিয়া।
ওয়াশিংটনের চিলড্রেনস ন্যাশনাল হসপিটালের ডাক্তারদের পর্যবেক্ষণ বলছে, কোনো ধরনের লক্ষণ ছাড়াই শিশুদের শরীরে বেঁচে থাকছে করোনাভাইরাস। অন্যদিকে শিশুদের থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাও বেশি হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন বোস্টনের একদল গবেষক। দক্ষিণ কোরিয়ার ২২টি হাসপাতালের ৯১ শিশুর তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ গবেষণাটি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই গবেষক রবের্টা ডেবিয়াসি ও মেগান ডিলানি। দেখা গেছে, শিশুদের শরীরে সক্রিয় ভাইরাস থাকতে পারে তিন দিন থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত।
পাশাপাশি বোস্টনের গবেষকরা বলছেন, শিশুদের শরীর থেকে পাওয়া করোনাভাইরাসের নমুনায় রয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বেশি ‘ভাইরাল লোড’ বা সংক্রমণ-ক্ষমতা। এ গবেষণার জন্য ৪৯ শিশু-কিশোরের নমুনা নেওয়া হয়। করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশুদের ভূমিকা কতটুকু, সে বিষয়ে আলোকপাত করছে এ দুই গবেষণা। এটি স্পষ্ট যে, তাদের থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা প্রবল। এছাড়া শিশুদের মধ্যে সেভাবে কোনো লক্ষণ দেখা না যাওয়ায় সংক্রমণ শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সব শিশুই ‘সুপারস্প্রেডার’। বরং পরিসংখ্যান বলছে, প্রাপ্তবয়স্করাও একই হারে সংক্রমণ ছড়াতে পারেন। জার্মানিসহ বেশকিছু দেশে গ্রীষ্মকালীন ছুটির শেষে লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে সংক্রমণ। এর মধ্যেই একে একে খুলতে শুরু করেছে বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন, স্কুল ও অন্যান্য গণশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা ও অন্যান্য পরিচ্ছন্নতার নিয়ম জারি করা হচ্ছে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে। নতুন করে আলোচিত হচ্ছে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত। আলোচিত হচ্ছে করোনার লক্ষণহীন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করার যৌক্তিকতাও। ইংল্যান্ডে স্কুল খোলার পক্ষ শিক্ষার্থীদের হাত ধুতে ও বিধিনিষেধ না মানার প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে সতর্কও করে দিয়েছেন।