জালিস হোসেন তন্ময়,তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি:
গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক রিসার্চ ইনস্টিটিউট কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে। তারা প্রাণীদেহেও এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেছে এবং ফলাফল সন্তোষজনক বলে দাবী করেছে।যার ফলশ্রুতিতে তারা এখন সরকারের কাছে ট্রায়ালের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের আবেদন করবে।
তবে ২০১৬ সালে হাইকোর্ট এক আদেশে মানহীন ঔষুধ তৈরির কারণে ৩৪ ঔষুধ কোম্পানীর ঔষুধ প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়। গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যাল ছিলো তার মধ্যে একটি। সরকার এদের ঔষুধ তৈরি করার লাইসেন্স বাতিল করে দেয় ২০১৪ সালে। হাইকোর্টে ২০১৭ সালে সেই নিষেধাজ্ঞা যথাযথ ছিলো বলে রায় দেয়। তবে এরা ঔষুধ তৈরি বন্ধ রাখেনি। গত বছর এই কোম্পানীর সরবরাহ করা নিম্নমানের ভিটামিন বি ট্যাবলেট খেয়ে লোকজন অসুস্হ হয়ে পড়ে। ২০১৮ সালে তাদের নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ফ্যাক্টরিতে গুরুতর কেমিক্যাল এক্সপোজার হয়। এক কর্মী মারাও যায়।
এই কোম্পানীর চেয়ারম্যান হলো হারুনুর রশিদ। তার ছোট ভাই মামুনুর রশিদ কিরণ নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের এমপি। এই গ্রুপের নানারকম অন্য ব্যবসা আছে, যেমন বিস্কুট, তেল, দুধ, পানীয়, পশুখাদ্য, ফিশারিজ৷২০১৭ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত খবরেই তার প্রমান পাওয়া যায়৷তাদের প্রকাশিত খবরটি ছিল কিছুটা এমন-“বিশেষজ্ঞ কমিটির মূল্যায়নে মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ ২০ কোম্পানির সব ধরনের ওষুধ ও ১৪টি কোম্পানির অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধই থাকছে। এসব কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন বন্ধের বিষয়ে আগের আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ-সংক্রান্ত রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে গতকাল সোমবার রায় দেন। এখন এই কোম্পানিগুলো ওষুধ তৈরি বা বিক্রি করছে কি না এবং কোম্পানির পরিস্থিতি তদারকি করে প্রতি তিন মাস পর পর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি চলমান তদারকিতে থাকবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন,এসব কোম্পানি ঔষধ প্রশাসনে আবেদন করলে কমিটি তা যাচাই করে জিএমপি লাইসেন্সের জন্য সুপারিশ করলে কর্তৃপক্ষ তা বিবেচনা করবে বলা হয়েছে।
যাদের ওষুধ উৎপাদন বন্ধ থাকবে
এক্সিম ফার্মাসিউটিক্যালস, এভার্ট ফার্মা লিমিটেড, বিকল্প ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, গ্লোব ল্যাবরেটরিজ (প্রাইভেট) লিমিটেড, মেডিকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, স্কাইল্যাব ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, স্পার্ক ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, স্টার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ট্রপিক্যাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ডলফিন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ড্রাগল্যান্ড লিমিটেড, জালফা ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, কাফমা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ন্যাশনাল ড্রাগ ফার্মা লিমিটেড, নর্থ বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, রিমো কেমিক্যালস লিমিটেড (ফার্মা ডিভিশন), রিড ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, সুনিপুণ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, টুডে ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে শেষের ১১টি কোম্পানির লাইসেন্স ইতিমধ্যে সরকার বাতিল করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত আদালত বহাল রেখেছেন বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।”
তাই করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারে ১১তম দেশ হিসেবে সংযোজিত বাংলাদেশ আসলে কতটা সফল হতে পেরেছে তা হয়ত পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়ার পরই জানতে পারবে পুরো বাঙালি জাতি৷