ছবির কপিরাইট Getty Images Image caption
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের সব সরকারি অফিসে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপনের সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের সব সরকারি অফিসে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপনের সুপারিশের কারণে উল্টো স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সংক্রান্ত কিছু নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, যেখানে সরকারি অফিসে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করার সুপারিশ করা হয়।
অথচ ১৬ই এপ্রিল বাংলাদেশের সব জেলার সিভিল সার্জনকে উদ্দেশ্য করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জারি করা এক নির্দেশনায় জীবাণুনাশক টানেল ব্যবহার করে শরীরে সরাসরি জীবাণুনাশক ছিটানো বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
ঐ নির্দেশনায় বলা হয়েছিল জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহৃত রাসায়নিক মানুষের ত্বক, চোখ, মুখে পড়লে ক্ষতি হতে পারে।
তবে তার এক মাসের মধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জীবাণুনাশক টানেল ব্যবহার করার বিপরীতধর্মী পরামর্শে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান জানান এই ধরণের টানেলের কার্যকারিতা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের দ্বিমত থাকায় কর্তৃপক্ষ দুই দফায় দু’রকম নির্দেশনা দিয়েছে।
“টানেলের কার্যকারিতা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতের পার্থক্য রয়েছে। তাই প্রথমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টানেল স্থাপন থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিলেও পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় তা পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে অফিসে টানেল স্থাপন করা বাধ্যতামূলক নয়, কর্তৃপক্ষ চাইলে টানেল স্থাপন করতে পারে।।”
তিনি জানান অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে কিছু সরকারি অফিস এ ধরণের টানেল স্থাপন করেছে, তবে স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে অনেক অফিসই টানেল বসানো থেকে বিরত থেকেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করার পর গত কয়েকদিনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি থানার প্রবেশপথে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করা হয়েছে, যেসব টানেলের মধ্য দিয়ে পার হওয়ার সময় ব্যক্তির শরীরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জীবাণুনাশক ছিটানো হয়ে থাকে।
এছাড়া গত সপ্তাহে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় সেনাবাহিনীর উদ্যোগেও জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করা হয়।
চট্টগ্রামের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান পুলিশের উদ্যোগে তৈরি করা জীবাণুনাশক হিসেবে টানেলে রাসায়নিক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ব্লিচিং পাউডারের দ্রবণ ও ৩% হাইড্রোজেন পার অক্সাইড সলিউশন।
কিন্তু ব্লিচিং পাউডার জীবাণুনাশক হিসেবে কার্যকর হলেও তা সরাসরি মানুষের শরীরের সংস্পর্শে এলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সুলতানা রাজিয়া বলেন এই ধরণের রাসায়নিকের সংস্পর্শে এলে স্বল্পমেয়াদে ও দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হতে পারে।
সূত্রঃ বিবিসি