আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকি। এই হাওরেই এখন বাদাম চাষ হচ্ছে। ভালো ফলন ও লাভ দেখে বাদাম চাষে ঝুঁকছেন স্থানীয় কৃষকরা। তবে কৃষকদের দাবি সরকারি সহযোগিতা পেলে তারা আরও এগিয়ে নিতে পারবেন। আর ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা এখন আশার আলো দেখছেন। তবে এবছর বিরূপ আবহাওয়া থেকে বাদামকে রক্ষা করতে আগেভাগেই বাদাম তুলে ফেলার জন্য চাষিদের জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ঝড়-বৃষ্টির কারণে বাদামের ক্ষতি হতে পারে, সেজন্য কৃষকরা বাদাম তোলা শুরু করেছেন। আর যারা একটু উঁচু জমিতে বাদাম চাষ করেছেন তারা আরও সপ্তাহখানেক অপেক্ষা করছেন। প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে হাকালুকি হাওরে থৈ থৈ পানি থাকে, সেখানে শীত মৌসুমে রবিশস্যের সবুজে সমারোহ। পুরো হাওরের এই সবুজ প্রকৃতি মন কাড়ে যে কারো। এই দৃশ্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছ্ুঁটে আসেন মানুষ জন। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বেলাগাঁও এলাকার হাকালুকি হাওরের গেলে দেখা যায়, পুরো এলাকাজুড়ে ফসলের সারিবদ্ধ মাঠ সবুজে ভরপুর। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে আকর্ষণীয় বাদাম ক্ষেতের মাঠ। ক্ষেতে কৃষকদের নিজ নিজ কর্মব্যস্ততা চোখে পড়ে। এসময় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছর থেকে হাওরের বুকে বাদামের চাষ হয়ে আসছে। কম খরচে ফলন ভালো হওয়ায় বেশিরভাগ চাষি অন্যান্য ক্ষেতের পাশাপাশি এখন বাদাম চাষে নজর দিচ্ছেন। এ সময় বাদাম চাষি নয়াগ্রামের শাহ আলম বলেন, ‘গত ৫ বছর থেকে আমি বাদাম চাষ করছি। এবার বাদামের ভালো ফলন হয়েছে। এ বছর ১ কিয়ার জায়গায় বাদাম চাষ করেছি। গত বছর প্রতি কেজি বাদাম খুচরা ৯০ টাকা ও পাইকারি ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করি। এ বছর আশা করছি ৭ থেকে ৮ মন বাদাম উৎপাদন হবে।’ ইউসুফনগরের আরেক চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, আমি ৩০ শতক জায়গায় বাদামের চাষ করেছি। আমি প্রবাসে ছিলাম সেখান থেকে এসে আমাদের জায়গায় ধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের শাক-সবজি চাষ শুরু করি। বিশেষ করে গত ৩ থেকে ৪ বছর থেকে বাদাম ও স‚র্যমুখী চাষ করছি। এগুলো চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছি। জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘উপজেলায় এ বছর ১১ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে হাকালুকি হাওরে। বাদামের চাষ বেলে-দোআঁশ মাটিতে ভালো হয়। অন্যান্য ফসলের চেয়ে বাদাম চাষে খরচ ও পরিশ্রম কম লাগে।’ তিনি বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে ঘ‚র্ণিঝড়সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ঝড়-বৃষ্টির কারণে হাওর এলাকায় বন্যা হয়ে যায়। এতে বাদামের ক্ষতি হতে পারে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগে কষ্টের ফসল যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য আমরা কৃষকদের জানিয়েছি। অনেকেই ইতোমধ্যে বাদাম তোলা শুরু করছেন।