নিজস্ব প্রতিবেদক/এপিএস নিউজ
ভয় দেখিয়ে এক স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নির্দোষ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য করায় দুই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন এ ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছেন।
পক্ষের বগুড়া আইনজীবী আল মাহমুদ বলেন, নির্দোষ আসামিরা বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
“পুলিশ জোর করে কেন সাধারণ মানুষকে হয়রানি করবে সেই নির্দেশনা চেয়েছিলাম। আদালত সঠিক নির্দেশনা দিয়েছে।”
এতে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা হলেন ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে কাহালু থানার ওসি দায়িত্বে থাকা নূর এ আলম সিদ্দিকী এবং ওই মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দুলাল ইসলাম।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দেওয়া এ মামলার রায়ে ওই নিদের্শনা দেন। তবে বৃহস্পতিবার প্রশাসনের কাছে পাঠানো ওই কপির নথি আইনজীবীর কাছ থেকে পাওয়া যায়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ওই মামলার বাদী বগুড়ার কাহালু মুরইল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম আদালতে জবানবন্দিতে বলেছেন, স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিযোগ তদন্তে ২০১৬ সালের ২৯ ডিসম্বের বিকাল ৪টার পর মুরইল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে আসেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মকবুল হোসেন।
‘মকবুল হোসেন স্কুলের অফিস রুমে বসে তদন্ত করতে চাইলে ছাত্রছাত্রীরা মাঠের মধ্যে তদন্তের দাবি জানায়। এতে শিক্ষা অফিসার রাজি না হলে ছাত্রছাত্রীরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষ লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।’
মামলায় মুরইল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেছেন, ওই দিন রাত ৯টার দিকে কাহালু থানার তৎকালীন ওসি নূর এ আলম সিদ্দিকী থানায় ডেকে নিয়ে একটি অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করতে বলেন।
‘ওই অভিযোগপত্রে আরিফুল ইসলামসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়। আমি তাতে অস্বীকার করলে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন তিনি। আমি ওসিকে বলি, ‘যাদের নামে মামলা দিয়েছেন তারা ছিলেন না।’ বাধ্য হয়েই পরে আমি স্বাক্ষর করেছি।’
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় বিচারক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন ওই মামলার ১০ জন আসামিকেই বেকুসুর খালাস দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী জানান, একই সাথে নির্দোষ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করায় দেশের প্রচলিত সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালা এবং সরকারি চাকরি আইন মোতাবেক দুই পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আদালতের নির্দেশনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রায়ের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আইজিপি পুলিশ হেডকোয়ার্টার ডিআইজ রাজশারী রেঞ্জ ও পুলিশ সুপার বগুড়াকে চিঠি পাঠানো হয় বলে আসামি পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন।