এপিএস আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
উত্তর গোলার্ধের শীতলতম স্থান হিসেবে সাইবেরিয়ার ভারখয়ানস্কের নাম সুবিদিত। কিন্তু চলতি বছরের জুনে সেখানে তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে! যেটা খাস বাংলায় দেখা যায় গ্রীষ্মকালে। উত্তর মেরুর কাছে এমন তাপমাত্রা বৃদ্ধি বরফ গলনের হারও বাড়িয়ে দিয়েছে।
শুধু তা-ই নয়, ইউরোপের পরিবেশ ও আবহবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জানুয়ারি থেকে জুন, এই ছ’মাসে সাইবেরিয়ার গড় তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি। ফলে রীতিমতো তাপপ্রবাহ দেখা গিয়েছে সেখানে। অতিরিক্ত তাপে ১১ লক্ষ হেক্টর বনভূমিতে দাবানল হয়েছে। তা থেকে পরিবেশে মিশেছে প্রচুর কার্বন ডাই-অক্সাইড। এর জন্য মানবসৃষ্ট দূষণ ও জলবায়ু বদলকেই দায়ী করছেন তাঁরা।
রাশিয়ার পিপি সিরসভ ইনস্টিটিউট অব ওশেনোলজি, রাশিয়ান অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশের বিজ্ঞানীদের একটি যৌথ রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাইবেরিয়ার ওই অঞ্চলে এমন তাপমাত্রা বৃদ্ধি ৮০ হাজার বছরে এক বার হতে পারে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা ১৩০ বছরের পর্যায়ে নেমে এসেছে এবং গ্রিনহাউস গ্যাসের মতো বিষাক্ত বায়ু নির্গমন না-কমালে আরও কম সময় অন্তর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
পিপি সিরসভ ইনস্টিটিউট অব ওশেনোলজির অধ্যাপক ওলগা জোলিনা বলছেন, ‘‘এই গবেষণায় শুধু তাপমাত্রা বৃদ্ধি নয়, জলবায়ু বদলের ইঙ্গিত মিলছে। সেটা বুঝতে আরও গবেষণা হবে।’’ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল চেঞ্জ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক ওল্টো বলছেন, ‘‘জলবায়ু বদল ও তাপপ্রবাহের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এই গবেষণায় ফের উঠে এসেছে। আমরা এখনও দূষণ কমাতে সচেষ্ট না-হলে ভবিষ্যতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়বে।” জুরিখের রাষ্ট্রীয় প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইটিএইচ জুরিখ) পরিবেশবিজ্ঞানের অধ্যাপক সনিয়া সেনভিরত্নের কথায়, ‘‘মানবসৃষ্ট দূষণ ছাড়া এই ধরনের বদল যে সম্ভব নয়, সেটা বার বার প্রমাণিত হচ্ছে। এর থেকে বাঁচতে হলে আমাদের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমিয়ে উষ্ণায়ন ঠেকাতে হবে এবং সেটা করতে হবে খুব কম সময়ের মধ্যেই।’’ আনন্দ বাজার