এপিএস আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
সেপ্টেম্বর, নাকি অগস্টেই!
দেশি হোক, বা বিদেশি— ভ্যাকসিন কবে আসছে, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। দিন কয়েক আগেই রাশিয়ার সেচনেভ বিশ্ববিদ্যালয় দাবি করেছিল, তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল শেষ। শীঘ্রই তা বাজারে ছাড়ার কথা ভাবছে তারা। তা হলে কি ব্রিটেন, আমেরিকা, চিন, ভারতকে টেক্কা দিয়ে বেরিয়ে যাবে রাশিয়া! বিশ্ব জুড়ে এ রকম একটা আলোচনার আবহে আজ জানা গেল, খুব সম্ভবত কালই ‘সুখবর’ দিতে চলেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ব্রিটেনের একটি সংবাদ সংস্থার দাবি, তাদের প্রতিষেধক তৈরির সহযোগী বায়োফার্মা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা-কে নিয়ে কাল সাংবাদিক বৈঠক করতে পারে অক্সফোর্ড। তাদের এই গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন ইবোলা প্রতিষেধক তৈরিতে দিশা দেখানো বিজ্ঞানী সারা গিলবার্ট। গবেষকদের একাংশ বলছেন, সেপ্টেম্বরে ভ্যাকসিন আনার ব্যাপারে তাঁরা ১০০% নিশ্চিত।
আজই আবার অন্য এক প্রতিষেধকের হিউম্যান ট্রায়ালে সাফল্য মিলেছে বলে দাবি করল মার্কিন সংস্থা মডার্না। গবেষকেরা জানান, যাঁদের উপর এর দু’টি ডোজ় দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে করোনা-মুক্ত মানুষের গড় অ্যান্টিবডির থেকেও বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবডি মিলেছে। সামান্য ঝিমুনি, মাথাধরার মতো কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও, স্বেচ্ছাসেবীরা ভাল আছেন। ভারতের দ্বিতীয় সংস্থা হিসেবে তাদের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে বলে আজ জানিয়েছে জ়ায়ডাস ক্যাডিলা-ও।
গত মাসেই ব্রাজিলে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবীর উপর ‘চ্যাডক্স-১’ প্রতিষেধকের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছিল অক্সফোর্ড। ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমটির দাবি, তাতে অভাবনীয় সাড়া মিলেছে। সব ঠিকঠাক চললে হয়তো সেপ্টেম্বর কিংবা তারও আগে বাজারে চলে আসবে ভ্যাকসিন। ওই সংবাদমাধ্যমের রাজনৈতিক বিভাগের সম্পাদক রবার্ট পেস্টন আজ বলেন, ‘‘সুখবর আসছে জেনে আর চেপে রাখতে পারলাম না। যেটুকু শুনেছি, তাতে অক্সফোর্ডের গবেষকদের আশা মতোই এর প্রয়োগে যথাযথ অ্যান্টিবডি ও টি-সেল (ঘাতক কোষ) তৈরি হচ্ছে মানবশরীরে।’’ কিন্তু অক্সফোর্ড তো এখনও তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়ের রিপোর্টই পেশ করেনি! বাঁদরের উপর যে পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়ার শুরু, সূত্রের খবর, শীঘ্রই তার সবিস্তার রিপোর্ট প্রকাশ করতে চলেছে ল্যানসেট।
বিশ্ব জুড়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছ’লক্ষ ছুঁইছুঁই। সংক্রমণ ১ কোটি ৩৫ লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় তাই ভ্যাকসিনের দিকেই তাকিয়ে বিশ্ববাসী। আমেরিকায় সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৬৭ হাজার নতুন সংক্রমণের খবর মিলেছে। মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৪০ হাজারের। শুধু নিউ ইয়র্ক প্রদেশেই মারা গিয়েছেন ২৫ হাজার জন।
এরই মধ্যে আজ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, প্রতিষেধক কিংবা জুতসই কোনও ওষুধ না-এলে আগামী নভেম্বরে দেশে মৃতের সংখ্যা ২ লক্ষ ২৪ হাজারে পৌঁছবে। এত দিন পর্যন্ত দেশের হাসপাতালগুলি তথ্য জানাত দেশের রোগ নিয়ন্ত্রণ সেন্টারে। সম্প্রতি ঠিক হয়েছে, এই রিপোর্ট এ বার থেকে সরাসরি যাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে। যার জেরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর খবরে স্বচ্ছতা অনেকটাই কমবে বলে আশঙ্কা একাংশের। করোনা-ত্রাসের আবহে এ বার রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটবে বলেও মনে করছেন অনেকে। আনন্দ বাজার