বরিশাল ব্যুরোঃ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হক সরদারের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে প্রাইভেট পড়ানোর সময় ছাত্রীদের সাথে যৌন হয়রানির অভিযোগে একটি ভিডিওসহ লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন অজ্ঞাত ব্যক্তি। ভিডিও ও অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝুমুর বালার মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে বিষয়টি বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করেন। এর প্রেক্ষিতে ঐ বছরের জুলাই মাসে অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ সবুজ আলম সরেজমিনে এসে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে সাময়িক ভাবে ঐ প্রধান শিক্ষকের সরকারি ভাতা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। সেই থেকে দীর্ঘ ৪ বছর শিক্ষকের বিষয়ে কোন তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি শিক্ষা অধিদপ্তর। এ কারণে ধ্বংসের পথে ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বেতন না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন শিক্ষক। বেতনভাতা ও তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়ায় প্রধান শিক্ষক ২০১৯ সালে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করায় কতিপয় শিক্ষকের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ কারণে চলতি বছরের জুলাই মাসে হঠাৎ করে ঐ শিক্ষকের পূর্বের যৌন হয়রানির ভিডিও ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। বিষয়টি নিয়ে পুনরায় টনক নড়ে প্রশাসনের। ৯ জুলাই গভীর রাতে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে এবং ১০ জুলাই ছেড়ে দেয়।
কারণ হিসেবে ওসি তদন্ত মোঃ হেলাল উদ্দিন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আটক করা হয়েছিল। যেহেতু তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা চলমান ও মহামান্য হাইকোর্টে মামলা রয়েছে এবং কেউ মামলা পরিচালনা করতে ইচ্ছুক নয় তাই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক নুরুল হক সরদার জানান, একটি মহল উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ছবি ভাইরাল করে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সরোয়ার হোসেন জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ ৪ বছরেও তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়ায় এবং স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তির ষড়যন্ত্রের কারণে এই বিদ্যালয়টি এখন ধ্বংসের পথে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল হক জানান, পূর্বের ঘটনা আবার নতুন করে ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে মন্ত্রণালয়ের বিষয়টি তার জানা নেই।