তালহা জাহিদঃ করোনাকালে দেশের ৬০ শতাংশ স্থানীয় পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট জার্নালিজম নেটওয়ার্ক (বিআইজেএন) শনিবার ‘করোনাকালে স্থানীয় পত্রিকাগুলোর পরিস্থিতি’- শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরে। ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়কারী আমীর খসরু।
তিনি বলেন, দেশের ৩৪টি জেলার ৪৫৬টি স্থানীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার ওপর আমাদের জরিপ কাজ পরিচালনা করা হয়। ২৩শে জুন থেকে ৩রা জুলাই পর্যন্ত দৈব্যচয়নের মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়। এতে দেখা যায় দেশের ৬০ দশমিক ৩১ শতাংশ অর্থাৎ ২৭৫টি স্থানীয় পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে। ১৮টি পত্রিকা অনিয়মিতভাবে অর্থ্যাৎ বিঞ্জাপন পেলে, অর্থের জোগাড় হলে প্রকাশিত হয়। আর নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে ১৬৩টি পত্রিকা, অর্থ্যাৎ ৩৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সপ্তাহে যেগুলো ৪ থেকে ৫ দিন প্রকাশিত হয় সেগুলোকেও নিয়মিত ধরা হয়েছে। তবে অধিকাংশ পত্রিকাই করোনা সংক্রমণের পরে বেশ কিছু দিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। আমীর খসরু বলেন, আর্থিক সংকটই হচ্ছে বন্ধের পিছনে প্রধান কারণ। বিজ্ঞাপন মিলছে না, এছাড়াও এখন মানুষ পত্রিকা কিনছেন না। আরেকটি বিষয় হকাররা সংবাদপত্র বিলি করছেন না।
তিনি বলেন, সংবাদপত্র বন্ধের প্রভাবে স্থানীয় পর্যায়ে ২৮৭ জন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলি। তাদের মধ্যে ৮৬ দশমিক ৪১ শতাংশ জবাবদানকারী জানিয়েছেন, স্থানীয় পর্যায়ের কাগজগুলো ওই স্থানের প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, কখনো কখনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী পর্যায়ে দুর্নীতি, অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার, অতিব্যবহার, আইনভঙ্গ ও নানাবিধ অন্যায় তুলে ধরে। অধিকাংশ পত্রিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এগুলো আর প্রকাশ হচ্ছেনা। জাতীয় সংবাদপত্রে অনেক খবর স্থান পায় না। কিন্তু অনেক দুর্নীতির চিত্র স্থানীয় পত্রিকাগুলো প্রকাশ পায়। ফলে স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে এই তথ্য প্রবাহ সচল থাকছে না। ফলে দুর্নীতবাজদের ভীতি কমে এসেছে। এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই। এখন একটা অনিশ্চয়তা, ভীতি আমাদের মধ্যে কাজ করছে।
সংবাদপত্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই স্বাধীনতা আরও কমে গেছে। অনেকেই এসব পত্রিকার মাধ্যমে উপকৃত হতেন। স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশে যে প্রবাহ ছিলো আগে তা অনেকটাই সংকীর্ন হয়েছে। এটি পুরো গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য বড় ধরণের হুমকি।