নিজস্ব প্রতিবেদক : কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহের কল্যানপুরের আতিয়ার রহমান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে।
২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ৪ তলা একটি ভবন নির্মানের কাজ ২০১৯ সালের আগষ্টে শুরু করা হয়েছে, যা ১৮ মাসের মধ্যে সম্পূর্ন হবার কথা। তবে ভবন নির্মানের শুরু থেকে ব্যাপক অনিয়ম আর দূর্নীতির অভিযোগ তোলে বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি ও বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অবিভাবকসহ স্থানীয়রা। অভিযোগ আগে প্রথমত তারা নিন্মমানের সিমেন্ট দিয়ে কাজ করছিলো। এক পর্যায়ে ৩শত বস্তা সিমেন্টও ফেরত পাঠানো হয়। প্রতিষ্টানটির সূত্রে জানা গেছে, ভবন নির্মাণে ওপিসি সিমেন্ট যার ক্যালোরি ৯৫-১০০ দেবার কথা, কিন্তু তারা ৬০-৬০ ক্যালোরি যুক্ত সিমেন্ট ব্যবহার করছিলো যার প্রেক্ষিতে ফেরত পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ২৫ হাজার অত্যন্ত নিম্মমানের ইট ভেঙ্গে খোয়া বানানো হয়েছে , অথচ ব্যবহারের কথা রয়েছে উন্নতমানের পিকেট। সেই নিম্মমানের ইটের খোয়া এখনও ব্যবহার হচ্ছে ভবনটির কাজে।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা কাজ করছে অপর দিকে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি বাধা দেওয়াতে নিম্মমানের ইট ফেরত নেওয়া হচ্ছে গাড়িতে করে । যার পরিমার ১৪ হাজার, এছাড়াও ভবনটি নির্মানের শুরুতে নিম্মমানের বালি ব্যবহারের অভিযোগ তুললে সেটা মানতে রাজি হয়নি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। পরে সেই বালি খুলনা থেকে পরীক্ষা করা হলে তুলনামূলক নিম্মমানের রিপোর্ট আসে। বিদ্যালয় কাজ ফ্রেশ এন্টারপ্রাইজ পেলেও সেখানে কাজ করতে দেখা গেছে অন্য প্রতিষ্ঠানকে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার আহবান জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওবাইদুর রহমান ।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, এসকল কাজ দেখার জন্য বিদ্যালয়ের দুজন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, দুজন শিক্ষক ও একজন দাতা সদস্য নিয়ে কাজ দেখা শোনার জন্য কমিটি করা আছে। তারাই সব কিছু দেখভাল করছেন। এমন নিম্মমানের পন্যের অভিযোগ আমি মাত্রই শুনলাম আপনার থেকে। তবে আমি চাই আমার বিদ্যালয়ের কাজ ভালো হোক।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খোয়াজ আলী জানান, কাজ শুরু হবার প্রথম থেকেই ঠিকাদাররা নিম্মমানের বালি, ইট, সিমেন্ট ও খোয়া দিয়ে কাজ করে আসছে। আমরা ম্যানেজিং কমিটি থেকে প্রতিবারেই বাধা দিয়েছে। তবে এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে ভবনটি নির্মান হবে ঠিকই কিন্ত তা হবে অত্যন্ত ঝুকিপূর্ন। কারন সব সময় তো আর দেখে রাখা যাচ্ছেনা। রডের মান নিয়েও আমার সন্দেহ রয়েছে।ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যোতসাহী সদস্য মিজানুর রহমান খান জানান, তারা এতোটাই নিম্মমানের কাজ করছে যে সব সময় পাহারা দিয়ে রাখতে হচ্ছে। একটা প্রতিষ্ঠান নির্মানে এতো নিম্মমানের পন্য ব্যবহার হলে তা কখনই স্থায়ী হবেনা।
উপরোক্ত বিষয় নিয়ে কথা হয় ভবনটি নির্মানের দায়িত্বে থাকা বাদশার সাথে। সুপারভাইজার বাদশা জানান, সিমেন্ট ওপিসি ফুরিয়ে গেলে তাৎক্ষনিক আমি আকিজ সিমেন্ট ব্যবহার করি যা ভালো মানের। তবে ইটের বিষয়ে তিনি জানান, কাজে ব্যবহারের জন্য আনা ইটে রেইন স্পর্ট থাকাতে এমন মনে হচ্ছে তবে মান ভালো। আতিয়ার রহমান মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে অনিয়মের এমন পরিস্থিতি অব্যহত থাকলে ঝুঁকিতে থাকবে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে এলাকাবাসী।