জিয়াউল কবীর স্বপনরাজশাহী ব্যুরো:”শুভ জন্মদিন ” ৬৭ বছর পেরিয়ে ৬৮ বছরে পা বাড়ালো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। আজ ৬ জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবতম দিন। উওরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে পথ চলা শুরু করে উওরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানটি।১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আইন পাস হয়।
প্রথম নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইতরাৎ হোসেন জুবেরীকে সঙ্গে নিয়ে মাদার বখ্শ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো পরিকল্পনা প্রণয়ণ করেন। এরপর ১৯৫৩ এর ৬ জুলাই মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয় রাবির পথচলা । শহীদ ড. শামসুজ্জোহার স্মৃতি বিজড়িত এ বিদ্যাপীঠের রয়েছে গৌরব-ঐতিহ্যের ইতিহাস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর পরিসর।বর্তমানে ৭৫৩ একর জমির উপর অবস্থিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ১১৭৭ জন শিক্ষক ও ২০০০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৩৩০ জনে। এর মধ্যে ছাত্র ২৫ হাজার ৫৭৯ জন ও ছাত্রী ১২ হাজার ৫৫১ জন। বর্তমানে ৯ অনুষদের অধীনে বিভাগ রয়েছে ৫৮টি। বেড়েছে অবকাঠামো। ১২টি একাডেমিক ভবনসহ বর্তমানে ছাত্রদের জন্য ১১টি ও ছাত্রীদের জন্য ৬টি আবাসিক হল রয়েছে। এছাড়া গবেষক ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক ডরমিটরি।
বিভিন্ন সময়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। দেশের প্রথম বুদ্ধিজীবী হিসেবে শহীদ হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা।১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহার প্রাণের বিনিময়ে স্বাধিকার সংগ্রামের ইতিহাসে যুক্ত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালনরত ড. জোহা ছাত্রদের মিছিলকে সংযত রাখার চেষ্টা করেছিলেন। এমন গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে স্মরণীয় করে রেখেছেড. জোহা চেষ্টা করছিলেন তার ছাত্ররা যাতে পশ্চিমা শাসক চক্রের লেলিয়ে দেয়া সশস্ত্র বাহিনীর আক্রমণের শিকার না হয়। কিন্তু তাদের বর্বর আক্রোশ মুহূর্তে বুলেট বিদ্ধ করে তার বুকে। ড. জোহার মৃত্যুতে সারাদেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। প্রতিবাদে পতন হয়েছিল স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের। তারই ফলে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির পথের একটি ধাপ এগিয়ে যায় মুক্তিকামী বাঙালি। সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা নিয়ে অনেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রেখেছেন।