রাকিবুল ইসলাম তনু পটুয়াখালী প্রতিনিধি, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভ্রমনে আর বাঁধা থাকছেনা।
প্রায় চার মাস পর ১ জুলাই বুধবার থেকে পর্যটকদের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এর ফলে সচল হবে অর্থনীতির চাকা। আর লোকসানের বেড়াজাল থেকে মুক্তি পাবে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। আবার ফিরে আসবে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতের প্রানচাঞ্চল্যতা। জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে পর্যটননির্ভর সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু থাকবে বলে কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় ও হোটেল মোটেল মালিকদের সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে জনজীবন রক্ষার জন্য পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন গত ১৮ মার্চ কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এ সময় কুয়াকাটায় আটকে পড়া পর্যটকরাও দ্রুত কুয়াকাটা ছেড়ে যার যার গন্তব্যে চলে যান। এরপরই বন্ধ হয়ে যায় কুয়াকাটার পর্যটনকেন্দ্রিক সকল ব্যবসা-বাণিজ্য। তবে আগত পর্যটকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে কুয়াকাটায় ভ্রমনে আসতে হবে। জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হোটেল মোটেল খুলে দেয়ার নির্দেশনা দেওয়ায় পর্যটনের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার মানুষ আবার কর্মমুখী হবে। ফিরে আসবে তাদের সু-দিন এমটাই জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যটননির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করার অনুমতি চাইলে জেলা প্রশাসন ১ জুলাই থেকে চালু রাখার অনুমতি দেন। এর আগে ৫, ৬ ও ৯ জুন করোনা কালীন হোটেল-মোটেল ব্যবস্থাপনা এবং পর্যটকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কর্মীদের ৩ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এ প্রশিক্ষনের আয়োজন করেন।
এছাড়া খাবার হোটেল মালিক-কর্মচারী, ভ্যান-অটোচালক, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালকেরাও এ প্রশিক্ষণের আওতায় ছিলেন।কুয়াকাটা হোটেল সমুদ্র বাড়ীর পরিচালক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, একজন পর্যটক গাড়িসহ হোটেলে আগমন করলে হোটেলকর্মীরা তার গাড়িসহ মালামাল জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করবেন। এর পর পর্যটক নির্ধারিত কক্ষে যাওয়ার আগে হাত-পা ধুয়ে যাবেন। স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে হোটেলের প্রতিটি কক্ষ ব্যবহার উপযোগী করা থাকবে।
ইলিশ পার্ক ইকো রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, করোনা থাকবে দীর্ঘদিন। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই আবাসিক হোটেল মোটেলসহ পর্যটনমুখী ব্যবসায়িদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে হবে। তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে।কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারন সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, জেলা প্রশানের সাথে কয়েকবার বৈঠকের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৪ টি শর্ত সাপেক্ষে ১লা জুলাই থেকে আবাসিক হোটেল মোটেল, রেস্তরা খোলার নির্দেশ দিয়েছেন। আবাসিক হোটেল মালিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটক রাখছে কিনা জেলা প্রশাসন ও হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন যৌথ ভাবে তা পর্যবেক্ষন করবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, করোনা কালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল ব্যবস্থাপনা করতে বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন