তালহা জাহিদ: গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথম মান ও প্রশস্ততায় উন্নীত করণ প্রকল্প এর আওতায় বরগুনা সড়ক ও জনপথ (স ও জ) বিভাগ পটুয়াখালী-আমতলী-বরগুনা-কাকচিড়া মহাসড়কের কিছু অংশের পূর্বে টেন্ডারের পুরো কাজ শেষ না করেই তরিগড়ি করে পৌর-শহরের ভিতরের ২ কি.মি. নতুন (সম্প্রতি করা) রাস্তা ভেঙ্গে কাজ শুরু করায় জনগনের চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে।
জানাগেছে, ৩টি প্যাকেজে পটুয়াখালী-আমতলী-বরগুনা-কাকচিড়া মহাসড়ক অংশের ২০.৬৫ কি.মি. রাস্তা প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেয় বরগুনা সড়ক বিভাগ। এর মধ্যে বরগুনা পৌর-শহরের টাউন হল বাসষ্ট্যান্ড থেকে ক্রোক সুলিজ পর্যন্ত (২ কি.মি.নতুন রাস্তা ) বাদে, এতে বরাদ্দ করা হয় ৯৪ কোটি ৬৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এদের মধ্যে পুরাকাটা- বরগুনা-বড়ইতলা মহাসড়ক অংশের পৃথক ২টি প্যাকেজের একটির কাজ (ইটবাড়িয়া থেকে টাউন হল পর্যন্ত ৬.৮০০ কি.মি.) নলসিটি ঝালকাটির মো. মাহফুজ খান লিঃ কার্যাদেশ পাওয়ার আড়াই মাস পড়ে কাজ শুরু করে আজ অবধি শেষ করতে পারেনি। পূর্বের টেন্ডারের (ইটবাড়িয়া থেকে টাউন হল পর্যন্ত ) কাজ শেষ করতে না করতেই আবার পৌর শহরের টাউন হল বাসষ্ট্যান্ড থেকে ক্রোক সুলিজ পর্যন্ত ২কিঃমিঃ নতুন রাস্তা ভেঙ্গে পূন: নির্মানের কাজ পায় ঐ একই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ মহা সড়কের এক (রাস্তার) অংশের কাজ শেষ না করে শহরের ভিতরের নতুন (সম্প্রতি করা) অংশ ভেঙ্গে কাজ করায় যেন মরার উপর ক্ষারার ঘাঁ। একে তো বর্ষা মৌসুম তার পরে বর্তমান বৈশিক করোনা ভাইরাস মহামারি বিপর্যয় কালীন সময় শহরের (সদর রোড) ২ কিঃমিঃ নতুন রাস্তা ভেঙ্গে জনগনের চলাচলে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি করার কারণ কি! তা বরগুনা সড়ক বিভাগ ছাড়া আর কেউ জানেনা। নতুন রাস্তাটি ভেঙ্গে পূন:নির্মানে জন্য বালু ও পাথর ফেলায় বর্ষার কারণে জনগনের চলাচলে সীমাহীন র্দূভোগ পোহাতে হচ্ছে।
অপরদিকে বরিশালের ওহিদ কনস্ট্রাকশন ও মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ এবং ওরিয়েন্ট ট্রেডিং এ- বির্ল্ডাস বড়ইতলা ফেরীঘাট থেকে ক্রোক সুলিজ ও পুরাকাটা থেকে ইটবাড়ীয়া পর্যন্ত ৯.২০ কি.মি. রাস্তার কাজ পায়। এরইমধ্যে পুরাকাটা থেকে ইটবাড়ীয়া পর্যন্ত সম্প্রতি রাস্তার কাজ শেষ করা হলেও নিন্ম মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় বর্ষায় রাস্তার কিছু অংশে বড় বড় গর্ত হয়ে পীচ ডালা (নতুন) রাস্তা ভেঙ্গে পড়েছে। অপর অংশ বড়ইতলা ফেরীঘাট থেকে শহরের ক্রোক সুলিজ পর্যন্ত বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই এবং উত্তর পাশে নদী ভাঙ্গন কিছু অংশে কোন পাইলিং না বসিয়ে কোন রকমের রাস্তা নির্মান কাজ শেষ করার উদ্যোগ নিচ্ছে ঠিকাদারী কর্তৃপক্ষ। আর এ যেন দেখার কেউই নেই।
সড়ক বিভাগ বারবার এ রাস্তা টেন্ডার দিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ভাগাভাগি করে সরকারের বরাদ্দের বিরাট অংকের অর্থ লোপাট করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে সাধারন মানুষের অভিযোগ।এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী পথচারী মাহবুব হোসেন, রুবেল হাং সহ কয়েকজন জানান, আমরা আশ্চর্য হয়েগেছি নতুন রাস্তা কেন ভাঙ্গছে। পুরাকাটা থেকে টাউন হল পর্যন্ত নিন্ম মানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ চলছে ধীর গতিতে। তাছাড়া বর্ষার সময় এ নতুন রাস্তা নির্মান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা করেছে। অনেককে চলাচলে গুনতে হয়েছে তিন থেকে চার গুন ভাড়া।
এ ব্যাপারে মাহফুজ খান লিঃ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রজেক্ট প্রকৌশলী এমডি সজীব হোসেন জানান, বৃষ্টির কারণে কাজ ধীর গতিতে চলছে। নতুন রাস্তা ভেঙ্গ রাস্তা নির্মাণের কার্যাদেশের তারিখ ও কাজ শেষ হওয়ার তারিখ সে জানেনা অফিস জানে।নিন্মমানের কাজের বিষয়ে কথা বলতে মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট প্রকৌশলী এমডি রাজীব হোসেনের মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।বরগুনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.হায়দার কামরুজ্জামানের কাছে নতুন রাস্তা ভেঙ্গে জনগনকে ভোগান্তি দিয়ে করোনা কালে এ রাস্তাটি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদকে জানান, আঞ্চলিক মহাসড়কের বাহিরের এ রাস্তা। শহর অঞ্চলের আওতায় রাস্তাটি নির্মান হচ্ছে। তাছাড় এ ২ কি.মি. রাস্তা বরিশাল অঞ্চলিক অফিস থেকে ১ বছর আগে টেন্ডার হয়েছে আমার (বরগুনা অফিস) টেন্ডার দেয়নি।
পুরাকাটা থেকে ইটবাড়ীয়া পর্যন্ত সম্প্রতি নতুন করা রাস্তার ভেঙ্গে পড়া ও ইটবাড়িয়া থেকে টাউন হল পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে ধীর গতি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ চলমান আছে যেটুকু ভেঙ্গে গেছে তা ঠিকাদার সেড়ে দিবেন এবং আইনগত জঠিলতার কারণে কাজ শেষ হতে একটু দেড়ি হচ্ছে।
বড়ইতলা ফেরীঘাট থেকে শহরের ক্রোক সুলিজ পর্যন্ত বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই এবং উত্তর পাশে নদী ভাঙ্গন অংশে কোন পাইলিনং না বসিয়ে কোন রকমের রাস্তা নির্মান কাজ শেষ করার ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিদ্যুতের খুঁটি সড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে পাইলিং করানো যাচ্ছে না কাজ চলমান আছে। পাইলিং করানো হবে।উল্লেখ্য এর পূর্বে ১১ জুন ২০১৮ বরগুনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শামসুল শাহরিয়ার ভুইয়া কে (বরগুনা স ও জ ) অফিস থেকে সাড়ে ১৪ লাখ ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে আটক করে দুদক।