নিজস্ব প্রতিবেদক॥ মিল মালিকের কাছে জিম্মি হয়ে পরেছে বরিশালের উজিরপুর উপজেলা খাদ্য অফিস। চুক্তি অনুযায়ী চাল ছাটাইয়ের জন্য উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে ধান নিয়ে গুদাম খালি করে না দেওয়ায় গুদামের স্থান সল্পতায় কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করতে পারছেন না গুদাম কর্মকর্তারা।
প্রতিদিন অসংখ্য কৃষক বিক্রির জন্য সরকারী গুদামে ধান নিয়ে এলেও ধান কিনতে পারছেন না কৃষি বিভাগ। ফলে ন্যায্য মুল্যে ধান বিক্রি থেকে বঞ্চিত হচেছন উপজেলার হাজার হাজার কৃষক। তবে উজিরপুর খাদ্য গুদামের কর্মকর্তারা জানান, চুক্তি অনুযায়ী চাল ছাটাইয়ের জন্য গুদাম থেকে ধান নেওয়ার জন্য মিল মালিককে বার বার তাগিদ দেওয়া স্বত্তেও তিনি তা কর্নপাত করছেন না। ইচছাকৃত ভাবে মিল মালিক গুদাম খালি না করায় সরকারের ধান চাল সংগ্রহ অভিযান পুরো পুরি ব্যার্থ হচ্ছে। এছাড়া ধান বিক্রি করতে এসে ধান বিক্রি করতে না পেরে গুদাম থেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন অসংখ্য কৃষক।
এতে কৃষকদের চরম ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচেছ। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদেও অবহিত করা হয়েছে। তবে এখনপর্যন্ত এ বিষয়ে কোন সুফল মেলেনি। উজিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উজিরপুরে ২৮০৩ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হয়। কিন্তু ২৮ জুন পর্যন্ত মাত্র ৩শ ১৮ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, উজিরপুর খাদ্য গুদামের ১ হাজার মেট্রিকটন ধান মজুদ করার সক্ষমতা আছে। বর্তমানে এখানে ৮০০ মেট্রিকটন চাল মজুদ আছে।
এছাড়া কৃষকদেও কাছ থেকে অদ্যাবধি ৩শ ১৮ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় ভবনের সান সেটেও ধান মজুদ করতে হচেছ। তিনি বলেন, উজিরপুর খাদ্য গুদামে চাল ছাটাইয়ের জন্য উপজেলা খাদ্য বিভাগের সাথে শিকারপুরের জয় অটো রাইস মিলের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী গুদাম বোধাই হওয়ার আগেই খাদ্য গুদাম থেকে ধান নিয়ে তা ছাটাই করে চাল দেওয়ার কথা রয়েছে। কিš‘ খাদ্য গুদাম পূর্ন হওয়ার আগেই জয় অটো রাইস মিল কর্তৃপক্ষকে ছাটাইয়ের জন্য ধান নিয়ে গুদাম খালি করার কথা বলা হলেও তিনি কর্নপাত করছেন না।
তাকে এ বিষয়ে একাধিকবার তাগাদা দেওয়া হলেও এই মূহুর্তে তিনি ধান নিতে পারবেন না বলে জানান। এতে করে কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনতে পারছেন না তিনি। গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম আরো বলেন, বিগত দিনে উজিরপুর উপজেলায় প্রায় শত ভাগ ধান চাল সংগ্রহ অভিযান বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
কিন্তু এ বছর মিল মালিকের খামখেয়ালীর কারনে বোরো ধান সংগ্রহ অভিযান ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে । এছাড়া প্রতিদিন অনেক কৃষক ধান নিয়ে গুদামে এসে বিক্রি করতে না পেরে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে কৃষকরা পরিবহন খরচসহ ন্যায্য মুল্যে ধান বিক্রি করতে পারছেন না। বিষয়টি তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন বলে জানান। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক বেনু মাধব বালা বলেন, তিনি ন্যায্য মুল্যে ধান বিক্রির জন্য গুদামে ধান নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু গুদামে জায়গা নেই বলে ধান বিক্রি করতে পারেন নি। তার পরিবহন খরচ কে দেবে।
তিনি বলেন, আমার মতো অনেক কৃষক ধান বিক্রি করতে না পেরে ধান নিয়েই ফিরে গেছেন। এ বিষয়ে জয় অটো রাইস মিলের মালিক আব্দুল মজিদ ভূইয়া বলেন, সরকারকে ১৫০০ মোট্রকটন চাল দেওয়ার জন্য আমাদেও চুক্তি আছে। আমরা চাল দিবো তার পর গোডাইন থেকে ধান নিবো। খাদ্য বিভাগ ধান কিনে মজুদ করে রাখুক তার পর আমরা সময় সুযোগ মতো নিয়ে নিবো। নির্ধারিত সময়ে ধান না নেওয়ায় এবং গোডাউন খালি না থাকায় সরকারের ধান চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যাহত হচেছ এর দায় ভার কে নেবে এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি মিল মালিক।