আব্দুম মুনিব, কুষ্টিয়া থেকে
শারীরিক প্রতিবন্ধী পলান। হাঁটেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন কুষ্টিয়া শহরের জিকে ঘাটের গড়াই নদীর চরে। থানাপাড়া মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের (মাতৃসদন হাসপাতাল) সামনে চা-পান বিক্রি করে কোনো রকম জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। বড় ছেলে বিয়ে করে অনেক আগেই নিজের মত করে সংসার পেতেছেন। পলানের মেজো ছেলে শিমুলের বয়স ১২ বছর।
জিকে স্কুলের ৮ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র সে। বাবাকে সার্বক্ষণিক কাজে সহযোগিতা করত শিমুল। দোকান থেকেই স্কুলে যেত, দোকানেই চলতো পড়ালেখা। বাবার সাথে চা-পান বিক্রি তো আছেই। শিমুল এভাবেই পড়ালেখার পাশাপাশি পিতাকে সহযোগিতা করে আসছিল। শিমুলকে ঘিরে পলান শেখের অনেক স্বপ্ন। ছেলে পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হবে। ছেলের হাত ধরেই হয়তো অভাব-অনটনের সংসারে সচ্ছলতা আসবে। কিন্তু সে স্বপ্ন আর পুরন হলো না পলানের। শুক্রবার (২৬ জুন) বিকেলে শিমুল দোকানের সামনে মাতৃসদনের ছাদে উঠে ঘুড়ি উড়াতে যায়।
ঘুড়ি উড়ানোর এক পর্যায়ে অসাবধানতাবশত মাতৃসদনের দোতলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় মারাত্মক আঘাত পায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করে। সেখানে চিকিৎসার এক পর্যায়ে রাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিমুল। শিমুলের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় জিকে ঘাট এলাকায় শোকের ছায়া নামে। শনিবার সকাল ১০টায় জিকে ঈদগাহে নামাজে জানাজা শেষে পৌর গোরস্থানে শিমুলের দাফন সম্পন্ন হয়।
এপিএস/২৮জুন/পিটিআই/মুনিব/কুষ্টিয়া