রাজশাহী মহানগরীতে চেয়ার বসা অবস্থায় একজন আইনজীবী মারা গেছেন। তার মৃত্যুর পর দুই ঘণ্টা কেউ মরদেহের পাশে যাননি। মরদেহটি চেয়ারের ওপরেই ছিল। পরে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন মরদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেছে।এই আইনজীবীর নাম কৃষ্ণ কমল দত্ত। বয়স ৮৫ বছর। তিনি নগরীর কুমারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
কুমারপাড়া এলাকার কালিমাতা মন্দিরের পেছনের বাড়িটিই তার। বাড়িতে তিনি একা থাকতেন। কৃষ্ণ কমল নিঃসন্তান ছিলেন। তার স্ত্রী দীর্ঘ দিন ধরেই তার সঙ্গে থাকেন না।কৃষ্ণ কমল রাজশাহী ও নাটোর জেলা জজ আদালত ও বিভাগীয় শ্রম আদালতে ওকালতি করতেন। প্রায় ১০ দিন ধরে তিনি জ¦র ও কাশিতে ভুগছিলেন। তবে তার শ্বাসকষ্ট ছিল না। করোনায় তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে প্রতিবেশিরা কেউ মরদেহের কাছে যাননি। দুই ঘণ্টা মরদেহ চেয়ারেই ছিলো।
মৃতের ছোট ভাইয়ের ছেলে সুইট কুমার দত্ত জানান, এ বাড়িতে কৃষ্ণ কমল দত্ত একাই থাকতেন। তার অসুস্থতার জন্য গত মঙ্গলবার তিনি নাটোরের সিংড়া থেকে এসেছেন। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তিনি বাইরে খাবার আনতে যান। কিছুক্ষণ পর এসে দেখেন চেয়ারে বসা অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
সুইট কুমার দত্ত আরও জানান, বৃহস্পতিবার কৃষ্ণ কমল দত্তকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। করোনার উপসর্গ আছে জেনে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে রাজশাহীর খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে চিকিৎসক কয়েকটি ওষুধ দেন। এরপর তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। তখন করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে চাইলেও কৃষ্ণ কমলের নমুনা নেয়া হয়নি। মিশন হাসপাতালে তাকে জানানো হয়, করোনার পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। বাসায় বিশ্রামে থেকে নিয়ম মেনে ওষুধ খেলেই তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন।
কৃষ্ণ কমলের মৃত্যুর পর প্রতিবেশিরা বিষয়টি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের জানান। তারা খবর দেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে। দুপুর সাড়ে ১২টার পর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের সদস্যরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মরদেহের কাছে যান। জীবানুনাশক ছিটিয়ে মরদেহটি শ্বসানে নিয়ে যাওয়া হয়। সৎকারে কোয়ান্টামকে সহায়তা করছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ।
বার্তা প্রেরক ইউনুস হাসান