যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে তাদের জনপ্রিয় ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম বিক্রি বন্ধ রাখবে। গত শুক্রবার কোম্পানিটি এই ঘোষণা দিয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। সম্প্রতি বৈশ্বিক জাতিগত অসমতা নিয়ে বিতর্কের কারণে কোম্পানিটি নতুন সামাজিক চাপের মুখে এই ঘোষণা দিয়েছে। জনসন অ্যান্ড জনসনের এক নারী মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কোম্পানিটির ভারতে বিক্রীত ক্লিন অ্যান্ড ক্লিয়ার ফেয়ারনেস শ্রেণির সব পণ্য বিক্রি বন্ধ করবে। এর আগে জুন মাসেই কোম্পানিটি এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে তাদের বিক্রীত নিউট্রোজেনা ফাইন ফেয়ারনেস শ্রেণির সব পণ্য বিক্রি বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিল।
জনসন অ্যান্ড জনসন জানায়, গত কয়েক সপ্তাহের আলোচনায় উঠে এসেছে আমাদের কিছু পণ্যের নাম বা কালো দাগ কমানো পণ্য ফর্সা বা সাদাকে মানুষের অনন্য চামড়ার চেয়ে ভালো বলে তুলে ধরা হয়েছে। এটি কখনোই আমাদের অভিপ্রায় ছিল না, সুস্থ ত্বকই সুন্দর ত্বক। হেলথকেয়ার কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা এখন আর এই পণ্যগুলো উৎপাদন বা পরিবহন করবে না। কিন্তু মজুদ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত দোকানগুলোতে পাওয়া যেতে পারে। নারীদের টার্গেট করে ত্বক ফর্সা বা উজ্জ্বল করার ক্রিম বাজারজাত করছে বিশ্বের বড় বড় সব পারসোনাল কেয়ার কোম্পানি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউনিলিভার, প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল, ল’ওরেল। এই কোম্পানিগুলোর ক্রিমের ব্র্যান্ডগুলো হলো যথাক্রমেÑ ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি, ওলে ও গার্নিয়ের। এই ক্রিমগুলো মূলত নারীদের জন্যই। কোম্পানিগুলো যে দাবি করে, সেটা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। অনেকেই এই ধরনের ক্রিম বিক্রি বন্ধ করার দাবি তুলেছেন।
জনসন অ্যান্ড জনসন-এর ত্বক ফর্সা করার ক্রিম বিক্রি বন্ধের বিষয়ে এসব কোম্পানি প্রতিক্রিয়া রয়টার্সের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এর আগেও বেশ কয়েকবার জনসন অ্যান্ড জনসন এই বিতর্কের মুখে পড়েছিল। কিন্তু তখন কোম্পানিটি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, উল্টো তাদের বাজারজাতকরণ নীতিমালায় পরিবর্তন এনে পণ্যগুলো বাজারে ধরে রাখে।
ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনালের তথ্য মতে, গত বছর ৬ হাজার ২৭৭ টন স্বক ফর্সা করার ক্রিম বিক্রি হয়েছে। এগুলোর মধ্যে কালো দাগ বা ছুলি দূর করার জন্য অ্যান্টি-অ্যাজিং ক্রিম হিসেবে বাজারজাত করা পণ্যও রয়েছে।