দীর্ঘ পরীক্ষার জট এবং বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে লিখিত পরীক্ষা কবে হবে তার সম্পূর্ণভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় ২০১৭ সালের লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষানবিশ আইনজীবীগণ এবং ২০২০ সালের এম সি কিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীগন লিখিত ও ভাইভা মওকুফ করে সরাসরি গেজেট দিয়ে সনদের দাবীতে আজকে এই কর্মসূচি পালন করেণ। ঢাকা জেলা থেকে শিক্ষানবিশ আইনজীবী মাহমুদ ও মোঃ নাহিদুর রহমান নাহিদ। চট্রগ্রাম জেলা থেকে খোরশেদ আলম। সিলেট জেলা থেকে লিটন দেব ও শেখ আবুল হাসনাত বুলবুল। চাঁদপুর জেলা থেকে আরিফুল ইসলাম আরিফ, আবির হাসান রনি। বগুরা জেলা থেকে মাহবুবুন নুর, মোঃ চাঁন মিয়া মন্ডল, মোহাম্মদ কাফি। সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে রাহুল কুমার,তাসলিমা আক্তার। টাঙ্গাইল জেলা থেকে আব্দুর রহমান আসাদ। কক্সবাজার জেলা থেকে আদনান রিয়াজ। মৌলভী বাজার জেলা থেকে তানিম আফজাল, খুলনা জেলা থেকে দোলন ঘোষ, কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে ওয়ালীউল্লাহ রাব্বানী তৌকির, পটুয়াখালী জেলা থেকে বাঁধন সিদ্দিক, সুনামগঞ্জ জেলা থেকে কৃপেশ রঞ্জন দাশ, শরিয়তপুর জেলা থেকে তানজিল বেপারী, মোঃইমরান চৌধুরী , সাজ্জাদ হোসেন, কাজল কুতুবউদ্দিন। পঞ্চগড় জেলা থেকে মোঃ আমানউল্লাহ আমান, নীলফামারী জেলা থেকে আল আমিন আকাশ। নোয়াখালী জেলা থেকে খান মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইনের সমন্বয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানববন্ধন এবং স্ব স্ব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ করেন। সারাদেশে একযোগে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা আজ এই কর্মসূচি পালন করেন।
দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের জন্য কাজ করে আসা ঢাকা আইনজীবী সমিতির শিক্ষানবিশ আইনজীবী আইনুল ইসলাম বিশাল বলেন “২০১৭ সালের আপিল বিভাগের রায়ে প্রতিবছর এনরোলমেন্ট প্রসেস সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশনা আছে, আজ প্রায় চার বছর হয়ে গেলেও এই নির্দেশনা কার্যকর করা হয়নি এবং গত ২৮ শে ফেব্রুয়ারি এনরোলমেন্ট পরীক্ষার প্রথম ধাপ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও বর্তমান ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির জন্য অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য লিখিত পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে গেছে, এছাড়াও প্রায় তিন বছর এনরোলমেন্ট পরীক্ষা হয়নি। তাই উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে দীর্ঘ পরীক্ষাজট নিরসনের জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নিকট শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের আবেদন লিখিত পরীক্ষা বাতিল করে ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণদের সনদ প্রদান করে উচ্চ আদালতের রায় কার্যকর করে দীর্ঘ পরীক্ষা জটের নিরসন করা হোক। এছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের এই বিষয়টি বিবেচনায় নিলে আশাকরি পরীক্ষা জটের অবসান হবে। তাই শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ করেছেন। ”
শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের দাবী নিয়ে দীর্ঘদিন সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসা ঢাকা আইনজীবী সমিতির শিক্ষানবিশ আইনজীবী বোনা আসাদ বলেন,’শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সবচেয়ে বঞ্চিত। আইন বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ব্যারিস্টার সহ বিভিন্ন উপাধি অর্জন করার পরেও বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কর্তৃক আইনজীবী তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য পরীক্ষার নামে প্রহসন সহ্য করে বছরের পর বছর বেকার বসে থাকতে হয় যা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নের গতিকে চরমভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তার স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য ,উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু সেই উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হচ্ছে বেকারত্ব। আইনজীবীরা সরকার থেকে কোন বেতন, ভাতা পায়না। তারপরও আইনজীবী তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য দীর্ঘ পরীক্ষার জটের কারণে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা আজকে চরম বেকারত্বের ভয়াল দশায় দুর্দশাগ্রস্ত তার উপর বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রকোপে সম্পূর্ণ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্মুখীন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। এমতাবস্থায়, সম্মানিত বার কাউন্সিলের বিজ্ঞ সদস্যগণ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহানুভূতির মাধ্যমে ২০১৭ সালের লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের এবং ২০২০ সালের এম সি কিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের লিখিত ও ভাইভা মওকুফ করে সরাসরি গেজেট দিয়ে সনদ দেয়া হলে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা দীর্ঘ পরীক্ষার জট থেকে মুক্তি পায় এবং বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে আমরণ কাজ করে যাবে ইনশাল্লাহ।’