খুলনার দাকোপ উপজেলার বাজুয়া এলাকায় ঘুম থেকে ডেকে তুলে পেটে ছুরি মেরে নীলোৎপল রায় (২৮) নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালের এ ঘটনায় এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ইমরান হোসেন ইমন শেখ নামের সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে হাসপাতালে ইমরানের মৃত্যু হয়।
নিহত নীলোৎপল বাজুয়া সুরেন্দ্রনাথ (এসএন) ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক সুকুমার রপ্তানের একমাত্র ছেলে। কলেজ ক্যাম্পাসের পাশে তাঁরা নিজস্ব বাড়িতে বসবাস করতেন। নীলোৎপল খুলনা সরকারি বিএল কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর (এমএসসি) পাস করে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আর ইমরান একই গ্রামের বাদল শেখের ছেলে। সে এসএন কলেজে উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল আটটার দিকে ইমরান নীলোৎপলকে ঘুম থেকে ডেকে উঠিয়ে ছুরিকাঘাত করে। পরে পাশের লোকজন চিৎকার শুনে এসে ইমরানকে ধরে বেঁধে ফেলে। নীলোৎপলকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান। পরে দাকোপ থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ইমরানকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে।
বাজুয়া সুরেন্দ্রনাথ (এসএন) ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শ্যামল রায় বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক সুকুমার রপ্তানকে কলেজ দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার এসএন কলেজের মাঠে গরু চরিয়ে কলেজের বারান্দা দিয়ে গরু নিয়ে যাচ্ছিল ইমরান। সে সময় কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক সুকুমার রপ্তান তাকে বারান্দা দিয়ে গরু নিয়ে যেতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে সে সময় দুজনের কথা-কাটাকাটি হয়। বিষয়টি কলেজের গ্রন্থাগারিক আমাকে ফোনে জানালে তাঁকে আমি ইমরানের বাবাকে বিষয়টি জানাতে বলি। সেই মোতাবেক আজ ইমরানের বাবাকে বিষয়টি জানানোর জন্য নীলোৎপলের বাবা ইমরানদের বাড়িতে যান। এরই মধ্যে সকালে ইমরান নীলোৎপলদের বাড়িতে এসে তাঁকে ডেকে তুলে পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নীলোৎপল মারা যান।’
দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফউদ্দীন আহম্মেদ ইমরানের মৃত্যু নিশ্চিত করে বলেন, ‘পুলিশ আজ বেলা ১১টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এরপর আমরা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পাই, হাসপাতালে আনার আগেই সে মারা গেছে।’
দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কলেজ মাঠে গরু চরানোর বিষয়কে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। নীলোৎপলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাঁর পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, গণপিটুনিতে নিহত ইমরানের লাশও ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো।
এপিএস/9জুন/পিটিআই/এনএস