কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
এজি লাভলু, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের উলিপুরে করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন ও দুস্থদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নগদ (২৫’শ টাকা) উপহারের তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে। ওই ইউপি সদস্য সুবিধাভোগীদের তালিকায় নিজের ও তার স্বামীর মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে। এ ঘটনায় সুবিধা বঞ্চিতরা ২৮ মে (বৃহস্পতিবার) উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুর সালমা সুবিধাভোগীদের তালিকায় কর্মহীন ও দুস্থদের নাম, ভোটার আইডি নাম্বার ব্যবহার করলেও মোবাইল নাম্বারের ক্ষেত্রে নিজের ও তার স্বামীর মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করেছেন। এছাড়া ওই ওয়ার্ডের প্রকৃত দুস্থ, অসহায়দের পরিবর্তে সমাজের বিত্তবান, স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নাম তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করাসহ সরকারের দেয়া অন্যান্য সুবিধা ভোগীদের নাম তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করে আর্থিক ভাবে সুবিধা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে।
সাখাওয়াত হোসেন, সাইফুল ইসলাম ও আশরাফ আলীসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন ও দুস্থদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার ২৫শ টাকার প্রনোদনা প্যাকেজের তালিকা প্রনয়নে ইউপি সদস্য নুর সালমা অনিয়মের মাধ্যমে আর্থিকভাবে সুবিধা নিয়েছেন। তারা বলেন, তবকপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ৫৪১ নং ক্রমিক নম্বরে মল্লিকা, পিতা মোসলেমের নাম থাকলেও মোবাইল নাম্বারের ক্ষেত্রে ইউপি সদস্য নুর সালমার মোবাইল (০১৯৯২১৫৭৫৯৯) নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে। ৪৫১ নং ক্রমিক নম্বরে পেয়ারা, পিতা আমজাদ নাম থাকলেও মোবাইল নাম্বারের ক্ষেত্রে ইউপি সদস্য’র স্বামী রেজাউল করিম রতনের মোবাইল (০১৯৩২৮০০৭২৮) নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে। বয়স্ক ভাতার সুবিধাভোগী সহিদুল ইসলামের পুত্র কলেজ পড়ুয়া হাবিবুবের নাম ১৪৮১ নং ক্রমিকে এবং বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত গোলাপ উদ্দিনের পুত্র বিজু মিয়া ক্রমিক নম্বর ৫৩৩ ও নাতি আল আমিন ক্রমিক ৫৩৭ এ অর্ন্তভূক্ত করেছেন। এলাকার বিত্তবান ৫৮৫ নং ক্রমিকে আনোয়ারুল ইসলাম ও ৬০১ নং ক্রমিকে শাহ জাহানের নাম রয়েছে। অপরদিকে ৫৩৯ ক্রমিকে ছলিম, ৫২৩ ক্রমিকে মামুনুর রশিদ ও ৫৩২ ক্রমিকে আকলিমা নাম থাকলেও তাদের মোবাইল নাম্বারের ক্ষেত্রে অন্য নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও ওই ইউপি সদস্য দুস্থদের নাম বাদ দিয়ে তার নিকট আত্বীয়-স্বজনদের নাম তালিকা ভূক্ত করেছেন। তারা আরও অভিযোগ করেন, অনিয়মের বিষয়ে ওই ইউপি সদস্যর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি আমাদের সাথে দূর্ব্যবহার করেন।
তবকপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুর সালমা তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অন্যের পরিবর্তে আমার নাম্বার ভুল বসত অফিস দিয়ে থাকতে পারে। ৪৫১ নং ক্রমিক নম্বরে পেয়ারার মোবাইল নাম্বারের পরিবর্তে তার স্বামীর মোবাইল নম্বরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই মহিলা আমার প্রতিবেশি ননদ তাই আমার স্বামীর নাম্বার দিয়েছেন।
তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ হোসেন মুকুল জানান, অভিযোগের বিষয়ে আমি শুনেছি। এ বিষয়ে ওই ইউপি সদস্য দুই-একটি মোবাইল নাম্বার ভুল হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে ২৮ মে বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুর কাদের জানান, অভিযোগ পেয়েছি, এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এপিএস/২৮মে/পিটিআই/কুড়িগ্রাম