কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
এজি লাভলু: কুড়িগ্রাম জেলায় ২৬ মে (মঙ্গলবার) রাত থেকে ব্যাপক হারে শিলাবৃষ্টি হচ্ছে। শিলাবৃষ্টির কারণে জেলার অনেক জায়গায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
ফসলের মধ্যে ধান, পাট, ভুট্টাসহ বিভিন্ন প্রকারের সবজিও রয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, নাগেশ্বরী, রাজারহাট ও ফুলবাড়ি উপজেলায় ব্যাপক ফসল ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় এসব অঞ্চলের কৃষকরা। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জানান, শিলাবৃষ্টির কারণে সবজিসহ ধান ও পাট ফসলের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে।
ফুলবাড়ীর কৃষক কার্তিক চন্দ্র জানান, তার ৩ বিঘা জমির পাকা ধান জমির মাটিতে পরে নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টির পূর্বে যারা ধান কেটেছেন তারা আবার টানা বৃষ্টির কারণে উঠানে ধান শুকাতে পারছেন না। যার ফলে ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছেন এসব ধানচাষীরা।
টানা বৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রাম জেলা সদরের অনেক সবজি বাগানও নষ্ট হয়েছে। সদরের চর কুড়িগ্রাম, কাঁঠালবাড়ি, দাশেরহাট এসব এলাকায় দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে মরিচ, ঢেরস, পাটশাক, করলাসহ অনেক সবজির বাগান নষ্ট হয়েছে।
গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে জেলার ১৬ টি নদ-নদীর পানি কিছুটা বেড়ে গেছে। যার ফলে অনেক জায়গায় পানি বাড়ার কারণে নদী ভাঙন দেখা গেছে। নদী ভাঙার কারণে সদরের যাত্রাপুরের জন ঘনশ্যাম এর অনেক মানুষের ভিটেমাটি নদীতে বিলীন হয়েছে।
উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নেও দেখা গেছে এরকম চিত্র। এ উপজেলার চলতি ভাঙনে নদীগর্ভে ভিটেবাড়ি হারান মো: রুহুল আমীন। তিনি বলেন, “আমার বাড়ি থেকে নদী অনেক দুরে ছিলো। গতিপথ পরিবর্তন হয়ে আমার সবকিছু ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। এখন আমি বাঁধের পাশে বাড়ি করেছি। কিন্তু এখানেও নদী আসতে পারে। আমার প্রতিবেশী আইযুব আলী, রফিকুল সহ অনেকের অবস্থা প্রায় একই”।
নদী ভাঙার এই অবস্থা এখনি যদি রোধ করা না যায় তাহলে ব্যাপক ক্ষতি হবার আশংকা আছে বলে মনে করেন এসব অঞ্চলের মানুষ।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলায় অবস্থিত কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিস থেকে জানা যায়, গত ২০ মে রাত থেকে ২৭ মে পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টিপাত এর গড় ছিলো ৩০ দশমিক ৯৭ মিলিমিটার। বৃষ্টির সাথে ছিল ঝড়ো হাওয়া। সব থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে জেলার নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গত সপ্তাহের ঘুর্নিঝড় আম্পানের পর থেকে কৃষিতে জেলায় ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
এপিএস/২৮মে/লাভলু/কুড়ি