ব্রুনাইয়ের পররাষ্ট্র বিষয়ক দ্বিতীয় মন্ত্রী এরিওয়ান পেহিন ইউসুফ মিয়ানমারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের বিশেষ দূত মনোনীত হয়েছেন।
এ কূটনীতিক শনিবার বলেন, যখন তিনি সংঘাতপূর্ণ মিয়ানমারে যাবেন, তখন যেন তাকে মুক্তভাবে চলাফেরা ও সব পক্ষের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়।
গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আসে। দেশটির বেসামরিক নেতা অং সান সু চি এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা অভ্যুত্থানের পর থেকে আটক রয়েছেন।
সহিংসভাবে বিরোধীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মোকাবিলা করছে ক্ষমতাসীনতা।
আসিয়ানের নিয়োগ পাওয়ার কয়েকদিন পর এরিওয়ান মিয়ানমার সফর নিয়ে বক্তব্য রাখলেন। তবে কোনো তারিখ ঘোষণা করেননি।
এরিওয়ানকে মানবিক সহায়তা বিষয়ক কার্যক্রম তত্ত্বাবধান, মিয়ানমারে সহিংসতার অবসান ঘটানো এবং সামরিক শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে আলোচনা শুরু করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
রাজধানী বন্দর সেরি বেগওয়ান থেকে ব্রুনাইয়ের পররাষ্ট্র বিষয়ক দ্বিতীয় মন্ত্রী এরিওয়ান সাংবাদিকদের বলেন, “মিয়ানমারে পূর্ব পরিকল্পিত সফর হবে, এবং আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে আমরা যখন সেখানে যাবো তখন আমরা ভালোভাবে প্রস্তুত থাকবো, জুন মাসের সফরের মতো এ সফর যেন না হয়। ”
এ দিকে মিয়ানমারের অভ্যুত্থানের নেতা সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং নির্বাচন নিয়ে সময় ক্ষেপণ করছে। এমন অভিযোগে কয়েকদিন আগে আসিয়ানের পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগের কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
গত এপ্রিলে বিশেষ এক সম্মেলনে মিয়ানমারের পরিস্থিতি উত্তরণে পাঁচ-দফা পরিকল্পনা গৃহীত হয় আসিয়ানে। কূটনৈতিক উদ্যোগের নেতৃত্ব দিতে বিশেষ দূতের নিয়োগ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
কিন্তু ক্ষমতা দখলে ছয় মাসের মাথায় গত রবিবার হ্লাইং জানান, মিয়ানমারের জরুরি অবস্থা ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। প্রাথমিকভাবে প্রতিশ্রুতি সময়ের এক বছরের বেশি সময় নতুন নির্বাচন হবে।
তখন এক মার্কিন সিনিয়র অফিশিয়াল বলেন, আসিয়ানকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। কারণ বার্মিজ জান্তা শুধু সময় ক্ষেপণ করছে ও নিজেদের সময় দীর্ঘায়িত করতে চায়।
আরও বলেন, মিয়ানমার যে পাঁচ-দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে, তার জন্য আসিয়ানকে যুক্ত থাকতে হবে।
এপ্রিলের ওই বৈঠকে হ্লাইং উপস্থিত থাকলেও পরে বিবৃতি থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন।
অভ্যুত্থানের ঘটনায় গত ছয় মাসে দেশটিতে নয় শতাধিক মানুষ নিহত হয়, আটক হয়েছে হাজার হাজার। আন্তর্জাতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞার মুখেও সহিংসতার পথ ছাড়েনি ক্ষমতা দখলকারীরা।