ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে কয়েক বছর ধরে সোনালি আঁশ খ্যাত ফসল পাটের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকেরা এখন সোনালি আঁশের স্বপ্ন দেখছে। সেই সাথে অন্যান্য ফসলের চাইতে পাটের জমিতে শ্রমিকসহ অন্যান্য উপকরণের দাম কম হওয়ায় পাট চাষের খরচও কম। তাই অল্প খরচে কম সময়ে বেশি লাভের আশায় উপজেলার কৃষকদের ধান চাষের পাশাপাশি পাট চাষের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুরুতেই আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও বর্তমানে মাঝে মধ্যেই বৃষ্টিপাতের কারণে পাট ভালো হয়েছে। গত কয়েকবছর যাবৎ পাটের বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় চাষিরা উন্নত জাতের পাট চাষের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। নিবিড় পরিচর্যা আর কৃষি অফিসের পরামর্শের কারণে পাটের তেমন কোনো রোগবালাই নেই।
জানা গেছে, সদর উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নে গম কাটা মারার পর স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে ইউনিয়ন পর্যায়ে চাষিদের পাট চাষের জন্য আগাম জাতের পাটের বীজ বপন করা হয়। শুরুতেই প্রচণ্ড খরার কারণে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় কিছু চাষিদের চারা নষ্ট হয়। পরবর্তীতে মাঝে মধ্যে হালকা বৃষ্টিপাতের কারণে পাটের চারা স্বাভাবিক হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে পাট গাছগুলো বেড়ে উঠেছে। অনেক পাট চাষিরা শেষ মুহূর্তে নানান বিষয়ে পরিচর্যা করছে। ভরা বর্ষা আসার আগেই পাট গাছগুলো কাটার উপযোগী হবে বলে এমনটাই চাষিরা আশা করছেন।
সরকারি-আধাসরকারি এবং ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পাটের বস্তা-ব্যাগসহ অন্যান্য পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এর বাজার মূল্য দিন দিন বাড়ছে। শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত এই অঞ্চলে পাট চাষ এক সময় শূন্যের কোটায় পৌঁছলেও বর্তমানে বাজারদর ভালো থাকায় সোনালি আঁশখ্যাত পাটের চাষ দিনদিন বাড়ছে। চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে ১ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
সদর উপজেলার রুহিয়ার পাট চাষি রুবেল হোসেন বলেন, ‘আমি কৃষি অফিসের পরামর্শে গম কাটা-মারার পরই আগাম জাতের পাটের বীজ বপন করি। শুরুতে খরার কবলে পড়লেও পরবর্তীতে হালকা বৃষ্টিপাতের কারণে আমার পাট ভালো হয়েছে। আশা করছি আশানুরূপ ফলন ও দাম দুটোই ভালো পাবো। গত বছর ভালো জাতের পাটগুলো প্রায় ২ হাজার টাকা দরে প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে।’
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষ্ণ রায় বলেন, ‘গম কাটার পর ওই জমিগুলো পাট চাষের উপযোগী হওয়ায় কৃষি অফিসের পরামর্শক্রমে চাষিরা পাট চাষের জন্য বীজ বপন করেন। প্রচণ্ড খরার কারণে কিছুটা ধাক্কা খেলেও বর্তমান কয়েক দফা বৃষ্টিপাতের কারণে পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। শেষ মুহূর্তে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পাটের ফলন ও দাম দুটোই ভালো পাবে কৃষকরা।