এপিএস নিউজ ডেস্ক
কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে বিচারের অপেক্ষায় আটক থাকা শিশুদের মুক্তি ত্বরান্তিত করছে ভার্চুয়াল আদালত। বৃহস্পতিবার (১৪ মে) বিচারের অপেক্ষায় আটক থাকা শিশুদের প্রথম দলের মুক্তি দেওয়াকে স্বাগত জানিয়েছে ইউনিসেফ।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে নিয়মিত আদালতের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় ইউনিসেফের সহযোগিতায় ভার্চুয়াল শিশু আদালত চালু করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই আদালতে আইন অমান্যের অভিযোগ থাকা শিশুদের বিচার দ্রুত করছে, যাতে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে তাদের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রগুলো থেকে মুক্তি দেওয়া যায়।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমো হোযুমি বলেন, ‘আমি সর্বান্তকরণে ভার্চুয়াল শিশু আদালত চালুর সিদ্ধান্তের প্রশংসা করছি এবং বন্দি দশা থেকে শিশুদের মুক্তি পাওয়াকে স্বাগত জানাচ্ছি। শিশুদের কল্যাণ ও সুরক্ষা অবশ্যই কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আমাদের কার্যক্রমের কেন্দ্রে থাকবে। সব ক্ষেত্রেই জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা শিশুদের জন্য এই মহামারিকে একটি স্থায়ী সংকটে রূপ নেওয়া থেকে প্রতিরোধ করতে পারি।’
গত মার্চে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে আটক শিশুর সংখ্যা বেড়েছে। এই সংখ্যা কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোর ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ। ছোটখাটো অপরাধের বিচার বা সাজার অপেক্ষায় থাকা এক হাজারের বেশি শিশু বর্তমানে তিনটি কেন্দ্রে আটক রয়েছে।
কেন্দ্রগুলোতে সীমিত সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও লজিসটিকস সহায়তা, প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও হাইজিন সুবিধা থাকার ফলে সেখানকার শিশু ও কর্মীদের সংক্রমণ ঝুঁকি কমাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা বা সেলফ আইসোলেশনের পক্ষে খুবই কঠিন। এসব কেন্দ্র সংক্রমণের হটস্পট হয়ে উঠতে পারে, যেখানে ভাইরাস সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।
শিশুদের সর্বোত্তম স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি গত ৯ মে ভার্চুয়াল আদালত চালুর জন্য অধ্যাদেশ জারি করেন এবং ১২ মে বাংলাদেশে প্রথম ভার্চুয়াল শিশু আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। এই আদালতের কার্যক্রম পরিচালনায় সমাজসেবা অধিদফতর এবং কেন্দ্রগুলোতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ইউনিসেফ।
গতকাল প্রথম দফায় সাত শিশুর মুক্তির পথ অনুসরণ করে আগামী দুই সপ্তাহে বেশ কয়েকশ’ শিশু মুক্তি পেতে পারে। এই শিশুরা যাতে তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হতে পারে সেজন্য পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ এবং তাদের নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দিতে সহায়তার লক্ষ্যে সমাজসেবা অধিদফতরের সঙ্গে কাজ করছে ইউনিসেফ। এসব শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা, মনঃসামাজিক সহায়তা, সহিংসতা প্রতিরোধ ও মোকাবিলা এবং শিক্ষার মতো অন্যান্য সেবা পাওয়ার সুযোগ করে দিয়ে পরিবারে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য সহায়তা দিচ্ছে ইউনিসেফ।
ভার্চুয়াল আদালত চালুর অধ্যাদেশের পর ইউনিসেফ এখন প্র্যাকটিস নির্দেশনা প্রণয়নে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে, যাতে শিশু আদালতগুলো আরও শিশুবান্ধব হয়ে উঠতে পারে। সূত্রঃ সারাবাংলা।
এপিএস/১৪মে/পিটিআই