করোনা মহামারির সঙ্কটে বেশ চাপেই আছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। সঙ্কট মোকাবিলায় তার নেতৃত্বে অসন্তুষ্ট দেশের জনগণসহ প্রশাসনের অনেকে। শুরু থেকেই তিনি এই মহামারিকে সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আর এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে ব্রাজিলের মানুষকে।
এরমধ্যেই বোলসোনারোর ওপর ক্ষোভ থেকে দেশটির তিন বাহিনী অর্থাৎ সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীর প্রধানরা পদত্যাগ করেছেন। কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করায় তিন বাহিনীর প্রধানরা এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
জানা যায়, মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল করেছেন বোলসোনারো। নতুন মন্ত্রীসভার সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার দেখা করতে যান সেনাপ্রধান জেনারেল এডসন লিয়াল পুজল, অ্যাডমিরাল ইকুয়েস বারবোসা এবং লেফটেন্যান্ট ব্রিগেডিয়ার অ্যান্তোনিয়ো কার্লোস বার্মুডেজ। সেই সাক্ষাতেই মন্ত্রীদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বাহিনী প্রধানরা।
এরপর এক বিবৃতিতে ব্রাজিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে তিন বাহিনীর প্রধান পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। শিগগির তাদের দায়িত্বে অন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
ব্রাজিলের স্থানীয় গণমাধ্যমের দাবি, দেশটির ইতিহাসে এর আগে একসঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান পদত্যাগ করেনি। প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের সঙ্গে অমিল হওয়াতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা।
এদিকে, কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারায় জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন বোলসোনারো। তার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ক্ষোভ এবং হতাশা তৈরি হয়েছে।
দুই বছর আগে দায়িত্ব গ্রহণ করা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোর দাবি, লকডাউন জারি করলে তা অর্থনীতিতে ধস নামাবে। তিনি মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এমনকি কোয়ারেন্টাইনেরও পক্ষে নন।
গত কয়েক সপ্তাহে দেশটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাসপাতালগুলোতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। অক্সিজেন সঙ্কট, অপর্যাপ্ত ওষুধ এবং হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ায় আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২৬ লাখ ৬৪ হাজার ৫৮ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৯৩৬ জনের।