মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘােষণাপত্র, ১৯৪৮ এর ২৬(১) ধারাঅনুযায়ী প্রত্যেকেরই শিক্ষালাভের অধিকার রয়েছে। অন্ততঃপক্ষেপ্রাথমিক ও মৌলিক পর্যায়ে শিক্ষাঅবৈতনিক হবে। প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক হবে। কারিগরী ওবৃত্তিমূলক শিক্ষা সাধারণভাবে লভ্য থাকবে এবং উচ্চতর শিক্ষা মেধার ভিত্তিতে সকলের জন্য সমভাবে উন্মুক্ত থাকবে। সেই হিসেবে আমাদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক মিলিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা। তার ঠিক পরবর্তী ধাপে আমাদের দেশে প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলাে থাকায় (জাতীয় সহ)। এগুলাে মােটেইউচ্চশিক্ষা নয় বরং পেশাগত বা কারিগরী বৃত্তিমূলক শিক্ষা। যদিও তা ডিগ্রি প্রদানেই ক্ষান্ত থাকে দক্ষ জনবল নয় বরং কেরানী হওয়ার দৌড়ে প্রতিযােগীতায় নামে। আমরা মুখে মুখে বিশ্ববিদ্যালয় বলে শান্তি পাই ঠিকই বড়ােসড়াে কলেজগুলাে কে আর যা হউক বিশ্বসূচকে কেনাে দেখছিনা এই মুখতায় না গিয়ে উচ্চশিক্ষা কি এবং কেনাে সেটা আগে বুঝলে হয়তাে কিছু আগে হলেও অবস্থার উন্নতি হতো। যাই হউক নির্দৃষ্টভাবে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের (যদিও আমার মতে এগুলো সংজ্ঞায় গুনে ও গঠনেCollege Including our শ্রেষ্ঠবিদ্যাপীঠ) ক্লাস শুরুর এবং হল খোলার ঘোষণা দেয়ার এখতিয়ার বা পিএসসি চাকুরীর পরীক্ষার চূড়ান্ত তারিখ দেয়ার এখতিয়ার শিক্ষামন্ত্রী রাখেন না। উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, ইউজিসি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো এর আওতায় পরে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংজ্ঞায়। মাননীয় মন্ত্রীর কাজ নেই এখানে। শিক্ষামন্ত্রকের নির্দেশে ইউনিভার্সিটির বিভাগ ভিত্তিক পরীক্ষা সম্পন্নের সিদ্ধান্ত হয়নি নাইবা হল বন্ধ হয়েছিলো। কিন্তু তাহলে এখন এই সিদ্ধান্তের সাথে সাথে চলমান পরীক্ষাগুলো কেনো স্থগিত করে ছাত্রছাত্রীদের ফের আটকিয়ে দেওয়া হচ্ছে?
স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেনো চুপ? তারা কি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশের অপেক্ষায় থাকবেন? ক্রমাগত আন্দোলনের পরও? সম্প্রতি পিএসসি ৪১ তম বিসিএস পূর্বের ঘোষিত তারিখেই পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।আবার শিক্ষামন্ত্রী বলছেন ভিন্ন কথা এরই মধ্যে ৪২ তম বিসিএসের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ৪১ তম হবে যথাসময়েই। পিএসসির থেকে কি কম ক্ষমতা রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি? তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের স্বকীয়তা ও সরকারের প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পাকিস্তান আমলের দীর্ঘ আন্দোলন ফলস্বরূপ পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ) বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ পায়। অর্থ্যাৎ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়বদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃক সৃষ্ট একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট এর উপর, সরকার বা ইউজিসির কোনো সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্যনন তারা। এই অধ্যাদেশের অধীন উপআইন বা বিধি প্রবিধান তৈরী করার ক্ষমতা রাখেন এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। নিয়োগ দূর্নীতি ও অনিয়মের কথা আসলে আমরা তখন স্বায়ত্তশাসনের দোহায় শুনি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্যে উপাযার্চ কি আইনের উর্ধ্বে? শীর্ষক একটি আর্টিকেলে প্রথমআলোতে আলোচিত সমালোচিত ভিসি মহোদয় ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটিতে হাজির হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। স্বায়ত্তশাসনের আড়ালে দূর্নীতির অভিযোগ ঢাকার খবর আমরা পাই। কিন্তু এই ক্ষেত্রে এতো আন্দোলনের পরও কোনো প্রেস রিলিজ দেখিনা। এদিকে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে স্কুল কলেজে খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে ৩০ শে মার্চ।
অথচ শিক্ষা মন্ত্রীর ঘোষণার পর পর চলমান সব পরীক্ষাসমূহ স্থগিত করা হয়েছে জাতীয় সহ সব বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অতি শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সঠিক সিদ্ধান্ত নিক এটাই আশা করি।
তাইমুম ইসলাম।
শিক্ষার্থী, রাবি।