শপথ নিয়েই নজিরবিহীন ঘটনার জন্ম দিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রথম দিনে একের পর এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করলেন তিনি। পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের একাধিক সিদ্ধান্ত রাতারাতি বদলে দিলেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন বাইডেন। তার আগে মার্কিন ইতিহাসে প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন কমলা। এরপরেই ওভাল অফিসে বসেন বাইডেন।
ডয়চে ভেলে জানায়, ওভালে বসেই ১৫টি প্রশাসনিক নির্দেশে সই করলেন জো বাইডেন। যার মধ্যে আছে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে নতুন করে যোগ দেওয়ার নির্দেশ।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাইডেন। অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়ও আছে এসব নির্বাহী আদেশে। এ ছাড়া সীমান্তে দেওয়াল নির্মাণ সংক্রান্ত বাজেটের ওপর স্থগিতাদেশ রয়েছে।
২০১৫ সালের এই চুক্তিতে বিশ্বের বহু দেশ সই করেছিল। এই মুহূর্তে ১৮৯টি দেশ এই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। ২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প গুরুত্বপূর্ণ এই জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। যা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে রীতিমতো আলোড়ন হয়েছিল। ক্ষমতায় এসেই সেই চুক্তিতে ফের যোগ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন বাইডেন। শুধু তাই নয়, বাইডেন জানিয়েছেন, পরিবেশ নিয়ে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ, করোনাকে প্রথম দিকে গুরুত্ব দেননি তিনি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বাইডেন জানিয়েছেন, করোনার সঙ্গে মোকাবিলার জন্য একটি অর্ডারে সই করেছেন তিনি। দেশের সমস্ত মানুষকে আগামী ১০০ দিন মাস্ক পরতে হবে। যে কোনো পাবলিক প্লেসে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসে করোনার জন্য একটি বিশেষ অফিস তৈরি করেছেন তিনি। যে অফিস গোটা দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে খবর রাখবে এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। বাইডেন জানিয়েছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাতেও ফের অংশীদার হবে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প সংস্থাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
১৩টি মুসলিম দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ট্রাম্প। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অজুহাতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তবে বাইডেন জানিয়েছেন, ওই নিয়ম বন্ধ করার নির্দেশে তিনি সই করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, অভিবাসন নীতি ট্রাম্পপূর্ব সময়ে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
মেক্সিকোর সীমান্তে দেওয়াল তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ট্রাম্প। তার অন্যতম স্বপ্নের প্রকল্প ছিল সীমান্তে দেওয়াল। এই ইস্যুতে সরগরম ছিল মার্কিন রাজনীতি। মেক্সিকান সীমান্তে অভিবাসীদের ঢল ও তাদের ওপর কঠোর আচরণের কারণে বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়েছিলেন ট্রাম্প।
এই ইস্যুতে অটল থেকে ইমার্জেন্সি ডিক্লারেশন দিয়েছিলেন ট্রাম্প। যাতে সীমান্ত প্রাচীর তোলার বাজেট আটকে না থাকে। বাইডেন সেই ডিক্লারেশন বাতিল করেছেন।