ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এম এম নাসিমুজ্জামানের বিরুদ্ধে এ শিক্ষককে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক আল-ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলতাফ হোসেন।
শনিবার এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে বিশ্বিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার বরাবর ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী। এছাড়াও অভিযুক্ত শিক্ষক নাসিমুজ্জামানকে বাঁচাতে একাধিক শিক্ষক মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষককে কোন প্রকার শাস্তি ছাড়াই বিষয়টি ঘরোয়াভাবে মিমাংসার জন্য একাধিক শিক্ষক তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ পত্র সূত্রে, শিক্ষক আলতাফ হোসেন ও শিক্ষক এম এম নাসিমুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় মেঘনা ভবনে বসবাস করেন। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে শিক্ষক আলতাফ হোসেন বাগান পরিচর্যার সময় প্রাণনাশের হুমকির শিকার হন। পূর্ব শত্রুতার জেরে শিক্ষক আলতাফ হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে অভিযুক্ত শিক্ষক নাসিমুজ্জামান লাঠি হাতে তেড়ে আসেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন, ‘তোকে আজ মাথা ফাটিয়ে খুন করে ফেলবো, তোর কোন বাবা আছে ডাক, আজকে তোকে মেরেই ফেলবো।’
এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও শিক্ষার্থীদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মোস্তা হাবিবুল ইসলাম এক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘লজ্জা থাকা দরকার। কে দেবে তাদের শিক্ষা? দেখেছি ইবির কর্মকর্তা কর্মচারীদের নোংরা রাজনীতি আর মারামারি। শেষ অব্দে এসে এটাও দেখতে হলো। এদের ঘৃনা করার মতো ঘৃনাও লজ্জা পায়। ইবি এসবের জন্য নোবেল পাবে সে সময় খুব কাছেই।’
আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন এক কমেন্টে লিখেন, ‘এমন পৈশাচিক শিক্ষক প্রক্টরের দায়িত্ব পায় কিভাবে? বানরের হাতে লাঠি (প্রক্টরের দায়িত্ব) পড়লে যা হয়, এদের থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায়না।’
এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক। তার জিডি নং-২৩। ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘এমন আচরণ মোটেই কাম্য নয়। সহকর্মীর থেকে এমন কিছু আশাও করিনি। থানায় জিডি করেছি। ভিসি, প্রো-ভিসি, প্রক্টর ও রেজিস্টার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। এমন আচরণের জন্য প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। ভিসি স্যারের সাথে কথা হয়েছে। ভুক্তভোগী যেন ন্যায্য বিচার পায়, অপরাধীও যেন পার পেয়ে না যায় সেই ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হবে। এমন আচরণের পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে প্রো-ভিসি, প্রক্টরের সাথে কথা হয়েছে। যার দায়িত্ব নিরাপত্তা দেওয়া তিনি যদি কলিগকে নিরাপত্তা দিতে না পারেন বিষয়টি দুঃখজনক।’