স্টাফ রিপোর্টারঃ এখন আর বিশ্বের কারো অজানা নেই যে, এইডস একটি ভয়ানক সংক্রামক রোগ। এইচআইভি নামক ভাইরাস রক্তে প্রবেশ করলে মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। তখন অনেক রোগ একত্রে আক্রমণ করে ওই মানুষকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।
আজ বিশ্ব এইডস দিবস। ১৯৮৮ সাল থেকে এইডসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্বে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সারা বিশ্বের ঐক্য, এইডস প্রতিরোধে সবাই নিব দায়িত্ব’।
জাতিসংঘের এসটিডি/এইডস বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ইউএন এইডসের গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশ্বে প্রতিদিন সাড়ে ৫ হাজার মানুষ নতুন করে এইডসে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ৫শ জনেরই বয়স ১৫ বছরের নিচে। আক্রান্ত ৩২ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছরের নিচে, যার ২০ ভাগই নারী।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বের মোট এইডস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩৭ দশমিক ৯ মিলিয়ন। এরমধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক লোক ৩৬ দশমিক ২ মিলিয়ন। মোট আক্রান্তের ১৮ দশমিক ৮ মিলিয়ন নারী এবং ১ দশমিক ৭ মিলিয়ন শিশু। শুধু ২০১৮ সালে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ দশমিক ৭ মিলিয়ন, যার মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১ দশমিক ৬ মিলিয়ন। এ সময়ে এইডস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার মানুষের। যার মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ৬ লাখ ৭০ হাজার এবং শিশু ১ লাখ।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে বর্তমানে এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। এসব রোগীর মধ্যে এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়ে চিকিৎসার আওতায় এসেছে মাত্র ৬ হাজার ৬০৬ জন।
প্রতিবারের মতো এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাংলাদেশে দিবসটি পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, এইডস একটি মরণঘাতী রোগ। বাংলাদেশে সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার কম হলেও ভৌগোলিক অবস্থান, অসচেতনতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অনিয়ন্ত্রিত আচরণ, কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণার জন্য এইডস এর ঝুঁকি যথেষ্ট প্রবল। তাই প্রতিকারের পাশাপাশি এইডস প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি, কুসংস্কার দূরীকরণ ও আচরণ পরিবর্তনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) এইচআইভি/এইডস বিষয়ক লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ হতে এইডস রোগটি নির্মূল করার জন্য জাতিসংঘের নিকট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা এইডস নির্মূল করতে সক্ষম হবো। আমরা প্রতিটি এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ফলে সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানে এইচআইভি সনাক্তকরণ পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিনামূলো এইডস এর চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে আজ দুপুর সাড়ে ১২ টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে সেমিনার ও প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।