সব
facebook apsnews24.com
বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ১৩ বছর: বিচারক সংকট মামলাজট নিরসনে অন্যতম অন্তরায় - APSNews24.Com

বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ১৩ বছর: বিচারক সংকট মামলাজট নিরসনে অন্যতম অন্তরায়

বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ১৩ বছর: বিচারক সংকট মামলাজট নিরসনে অন্যতম অন্তরায়

নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ১৩ বছর পূর্ণ হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে একদিকে বেড়েছে বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অন্যদিকে বেড়েছে মামলাজট। জট নিরসনে অবকাঠামোগত ব্যবস্থাপনার সঙ্গে প্রয়োজন বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি। কেননা বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি করা না গেলে দেশে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা অসম্ভবপর হয়ে যাবে। এতে করে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থার সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার গোড়াপত্তন ঘটে মাসদার হেসেন মামলার রায়ের আলোকে। সে রায়ের ফলে ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ করা হয়। এরপর থেকে শুরু হয় বিচার বিভাগের স্বাধীন পথচলা। শুরুতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন না থাকায় বিচারকদের এজলাশ ভাগাভাগি করে কাজ করতে হতো। তবে সময়ের ব্যবধানে সে অবস্থার অনেকটাই উত্তরণ করতে পেরেছে বিচার বিভাগ। কিন্তু লাগামহীন হয়ে পড়েছে মামলাজট।

সাবেক প্রধান বিচারপতি ও বাংলাদেশ আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এবিএম খায়রুল হক বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাজে অপরাধের মাত্রা বেড়েই চলেছে। সেসব অপরাধ দমনে দৃশ্যমান বিচার ব্যবস্থার লক্ষ্যে নিয়ে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। দেশে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে পারলে অপরাধের হার কমে আসবে। আইনের শাসন আরও কার্যকর হবে। আর এসব কিছুর শুরুতেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক নিয়োগ দেওয়া জরুরি হয়ে উঠেছে।’

সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে মোট বিচারপতি রয়েছেন ১০২ জন। আর দেশের অধস্তন আদালতগুলোতে বিচারকের সংখ্যা এক হাজার ৮০১ জন। অথচ সারাদেশে মামলার সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখেরও বেশি।

কয়েকটি সূত্র থেকে জানা গেছে, অধস্তন আদালতে বিচারকদের সংখ্যা এক হাজার ৮০১ জন হলেও আদালতের মূল বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে আছেন প্রায় এক হাজার ৪০০ জন বিচারক। আর অবশিষ্ট বিচারকগণ সুপ্রিম কোর্ট, আইন মন্ত্রণালয়, ট্রাইব্যুনাল, আইন কমিশনসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ডেপুটেশনে (পদায়ন) কর্মরত রয়েছেন। ফলে বিচারকদের কৃত্রিম সংকট মামলাজট নিরসনে ডেকে এনেছে বিপর্যয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান মনে করেন, ‘বিচার বিভাগে মামলাজট নিরসন করা না গেলে আদালত অঙ্গনের অনিয়ম ও দুর্নীতিগুলো রোধ করা সম্ভব হবে না। আবার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলেও মামলাজট নিরসন জরুরি। হাজার হাজার মামলার ভিড়ে কোনও মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতেই এক ধরনের চক্র গড়ে উঠেছে। এসব অবস্থা থেকে পরিত্রাণ খুঁজতে হলেও সারাদেশে বিচারক নিয়োগের হার বৃদ্ধি করতে হবে। এমনকি মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সময় নির্ধারণ করে দিতে হবে।’

নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর মামলাজট নিরসনকে প্রধান চ্যালেঞ্জ মনে করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। তিনি গণমাধ্যম কে বলেন, মামলাজট নিরসন করাটাই আমার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। ইতোমধ্যে এই জট নিরসনে ব্যক্তিগত কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। পাশাপাশি বিচারক নিয়োগসহ আরও কিছু বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে শিগগিরই আলোচনা করবো।

এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মামলাজট নিরসনে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি সবকিছু পাল্টে দিয়েছে। আমরা এই মামলাজট নিরসন, আদালতের অনিয়ম বন্ধ ও বিচারক নিয়োগসহ সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো এবং জনগণের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবো। জনগণের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দেওয়া না গেলে তার পরিণতি কি হবে সেটা মুখে উচ্চারণ করাও উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন।

লেখকঃ বাহাউদ্দীন ইমরান।

আপনার মতামত লিখুন :

মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরব গাঁথা মার্চ মাস

মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরব গাঁথা মার্চ মাস

ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করতে কতজন সাক্ষী প্রয়োজন, আইন কি বলে!

ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করতে কতজন সাক্ষী প্রয়োজন, আইন কি বলে!

বাংলা ভাষার সর্বজনীন ব্যবহার নিশ্চিত হোক

বাংলা ভাষার সর্বজনীন ব্যবহার নিশ্চিত হোক

ইসলামী ব্যাংকিং পূর্ণতা পাওয়ার পথে সমস্যা: সমাধানের উপায়

ইসলামী ব্যাংকিং পূর্ণতা পাওয়ার পথে সমস্যা: সমাধানের উপায়

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ক্ষুধার্ত মানুষ ও আমাদের তামাশা!

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ক্ষুধার্ত মানুষ ও আমাদের তামাশা!

দেনমোহর পরিশোধের বাধ্যবাধকতা, সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও বাস্তবতা

দেনমোহর পরিশোধের বাধ্যবাধকতা, সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও বাস্তবতা

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার: ApsNews24.Com (২০১২-২০২০)

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
০১৬২৫৪৬১৮৭৬

editor@apsnews24.com, info@apsnews24.com
Developed By Feroj