শিক্ষকতা যেমন একটি মহান পেশা, সাংবাদিকতাও তেমনিই একটি মহান পেশা, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। শিক্ষকরা যেমন দেশও জাতি গড়ার কারিগর তেমনি একজন সাংবাদিকও দেশ গড়ার ক্ষেত্রে দেশের ভাবমুর্তি অক্ষুন্ন রাখার জন্য এবং দেশ, বিদেশে সঠিক সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রেও পেশাদার হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে কোন তথ্যবহুল সংবাদ লেখার সময় তাকে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কোনভাবে যদি ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয় তার জন্য অনেক খেসারত তাকে দিতে হয়। একটি ভুল সংবাদ পরিবেশনের জন্য একটি জাতির, একটি গোষ্ঠীর, একটি সমাজের, একটি সম্প্রদায়ের, একটি পরিবারের, একজন ব্যক্তির বা রাষ্ট্রের অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। সুতরাং একজন সাংবাদিকের উচিত অত্যন্ত দক্ষতার সাথে নিঃস্বার্থ ভাবে এবং নিরপেক্ষভাবে এবং অত্যন্ত মনোযোগের সাথে সংবাদ পরিবেশন করা। এমন অনেক সংবাদ আছে যেগুলি প্রচার করা বা লেখা এবং প্রকাশ করার সময় অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। এমনকি মৃত্যুরও ঝুঁকি আসতে পারে তবুও সবকিছু জানা স্বত্বেও কিছু সাহসী নির্ভীক সাংবাদিক আছে যারা সততার ও নিষ্ঠার সাথে এবং অকুতোভয় সাহসী সৈনিকের মত তারা তাদের মত প্রকাশ করে। তারা কোন ভয়কে পরোয়া করে না। তাদের সাহসী ভূমিকার জন্য একটি পরিবার একটি জাতি বা একটি গোষ্ঠী অনেক উপকৃত হয়। আবার নিরপেক্ষ না থেকে কোন দল বা গোষ্ঠীকে একটু সন্তুষ্ট রাখার জন্য কুরুচিপূর্ণ সংবাদ পরিবেশন করলে সেই সাংবাদিক সমাজে অনেক ঘৃনিত হয়। মানুষ তাকে কোন ভাবেই শ্রদ্ধা করে না। পৃথিবীতে এমন অনেক নজির বা ইতিহাস আছে যারা সঠিক সংবাদ পরিবেশন করতে যেয়ে আতহুতি দিতে হয়েছে বা নির্যাতিত হতে হয়েছে। হয়তো তাদের পরিবার বা পরিবারের অনেক সদস্যকে দুঃখ, কষ্ট, জ্বালা, যন্ত্রনা, ও নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। কিন্তু জনগনের কাছে অনেক প্রিয় সৎ ও আদর্শবান সাংবাদিক হিসাবে তারা স্থান করে নিয়েছে। তারা মৃত্যুর পর ও অমর থাকে। এক্ষেত্রে আমরা দুই একটা উদাহরণ দিতে পারি। সাম্প্রতিক কালে ঘটে যাওয়া কক্সবাজারে সাবেক সেনাবাহিনীর মেজর সিনহা মোঃ রাসেল এর নির্মম ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের মধ্যদিয়ে হত্যাকান্ডের কথা। কিন্তু তিনি কোন ভয় পাননি। নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। গোটা জাতির কাছে আজকে সিনহা বাঘের মত বলিষ্ঠ একজন কন্ঠস্বর হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে। এই ভাবে আমরা সাগর-রুনির কথা বলতে পারি আজও পর্যন্ত তাদের তদন্ত রিপোর্ট আড়ালে থেকে গেছে। এভাবে আমাদের দেশে অনেক সাহসী সাংবাদিক আছে হয়তবা তারা আমাদের দৃষ্টির আড়ালে রয়ে গেছে। তাদেরকেও আজকে আমাদের উচিত শ্রদ্ধা করা। পরিস্থিতি যাই হোক আর যেটাই ঘটুক সাংবাদিকরা কখনও কাউকে ভয় পায় না বরং দুর্নীতিবাজরা ঘুষখোররা এবং সমাজের চোখে যারা অত্যন্ত খারাপ লোক তারা যে বিভিন্নভাবে দোষী বা অপরাধী সেটা তারা জানে সুতরাং তারাই সাংবাদিকদের ভয় পায়। আমি হয়তো দুই-একটি উদাহরণ দিয়েছি মাত্র। বাংলাদেশকে পৃথিবীর মানচিত্রে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য এবং রাষ্ট্রের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে আর্থ সামাজিক ও রাজনৈতিক অবকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরাই মূলত মূখ্য ভূমিকা পালন করছে। তারা স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে পারছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা মনে করে দেখুন ৫২র ভাষা আন্দোলনের কথা ভাবুন, ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থানের কথা ভাবুন এবং এমনকি ৯০ দশকের সময়ের সৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের কথা ভাবুন সকল ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে একাতœতা প্রকাশ করে তৎকালীন সময়ে যে ভূমিকা আমাদের দেশের জন্য পালন করেছেন তাহা প্রশংসার দাবিদার। সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডকে আরও বেগবান করার জন্য তারা সর্বদা সচেষ্ট থেকেছেন। দেশের অভ্যন্তরে কোথায় কি ঘটছে এবং বিভিন্ন অপশক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন গোয়েন্দা বিভাগ যেভাবে কাজ করে সঠিক তথ্যটি যেমন উদঘাটন করতে পারে ঠিক তেমনি সাংবাদিকরাও সঠিক তথ্য উদঘটন করে জাতির সামনে প্রকৃত ঘটনাটি প্রকাশ করে। সুতরাং আমরা বলতে পারি সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। এই পেশাকে কখনও ছোট করে দেখা উচিত না। সবাইকে উচিত একজন সাংবাদিকের নির্ভিক ভাবে সংবাদ পরিবেশন করার ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ এবং উৎসাহিত ও অনুপ্রানিত করা। তারা আমাদের সমাজের একটি অংশ তথা রাষ্ট্রেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমি দেখেছি আমাদের সাতক্ষীরা জেলার সাংবাদিকরা সাতক্ষীরা জেলাকে দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে যাতে একটু বেশী উন্নতির ছোঁয়া পেতে পারে তার জন্য অবিরাম চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে কপোতাক্ষ নদ খনন প্রসঙ্গে, জেলা শহরের প্রান কেন্দ্রে অবস্থিত প্রান সায়ের নামক খালটাকে পুনরায় খনন করে শহরের জলাবদ্ধতা দূর করা, বিভিন্ন উপজেলা বা ইউনিয়ন এবং এমনকি বিভিন্ন ওয়ার্ডের কোথায় কোন রাস্তা কালভার্ড এবং স্কুল কলেজের বেহাল অবস্থা সবকিছুই কিন্তু সাংবাদিকদের লেখার মাধ্যমে আমরা অবগত হই এবং প্রশাসনের ও দৃষ্টি গোচর হয় এবং দ্রæত কাজ শুরু হয়ে যায়। এছাড়াও সাতক্ষীরা জেলার কোথায় কোন ঘটনা ঘটছে তাৎক্ষনিক ভাবে আমরা সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পারি। সাতক্ষীরার চিংড়ী ঘের, কাঁকড়া চাষ এবং বিভিন্ন জাতের আম, পেঁয়ারা, কুল প্রভৃতি যে বিদেশে রপ্তানী হয় তাহা কিন্তু আমরা আমাদের এলাকার সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারি। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে যুব সমাজ মাদকদ্রব্য সেবনের মাধ্যমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মদ, গাজা, আফিমের মত মাদকে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে এমনকি নারীদেরকে উত্যাক্ত করছে ইত্যাদির বিরুদ্ধে সঠিক সংবাদ সাংবাদিকরাই পরিবেশন করছেন। উল্লেখ্য যে করোনার হাত থেকে সুরক্ষার জন্য ও জনসচেতনা সৃষ্টির জন্য যা যা দরকার আজকে লেখার মাধমে আমাদের সম্মুখে তুলে ধরছেন। সুতরাং সাংবাদিকরা ও যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের জেলাকে বাংলাদেশের মানচিত্রে একটি অনন্য জেলায় রুপান্তরিত করেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আমাদের জেলার প্রত্যেকটা মানুষ সাংবাদিকদের লেখার মাধ্যমে সব বিষয়ে জানতে পারছেন এবং প্রশাসনের তড়িৎ সিদ্ধান্ত ও সহযোগিতায় আজকে মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারছে। এটা অনেকটাই নিশ্চিত। তাই আসুন আমরা সকল