তালহা জাহিদঃ বরিশালের বানারীপাড়ায় যৌতুকের দবিতে প্রকাশ্যে এক গৃহবধূর পায়ের রগ কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে। রগ কাটা ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গতকাল (৩ই) অক্টোবর শনিবার সকাল ৯টায় পৌর শহরের ৬নম্বর ওয়ার্ডের দুলাল বালীর বাসার সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আহত গৃহবধূর নাম হ্যাপী। তিনি উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউপির হাওড়াবাড়ির আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। গত ১০ বছর আগে একই এলাকার হাসান বালীর ছেলে রাসেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
আহত হ্যাপীর পরিবার জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তিন লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে হ্যাপীকে নির্যাতন করছে রাসেল। স্বামীর যৌতুকের লোভ মেটাতে হ্যাপী তার স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক রেখে ৩৬ হাজার টাকা দেয়। তবুও বাকি টাকার জন্য হ্যাপীর ওপর নির্যাতন অব্যাহত রাখে রাসেল।
হ্যাপী জরায়ু সমস্যা থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করায় রাসেল। রাতে অসহ্য যন্ত্রণায় হ্যাপী উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বামীকে অনুরোধ করে। এতে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে চিকিৎসা করাতে বলে রাসেল। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়।
শনিবার সকালে হ্যাপী শিশু সন্তান রাতুলকে নিয়ে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বানারীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রওনা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাসেল ও তার বাবা হাসান বালী হ্যাপীর পিছু নেয়। এক পর্যায়ে সকাল সাড়ে ৯টায় বানারীপাড়া পৌর শহরের হাইস্কুলের পাশে দুলাল বালীর বাড়ির সামনের সড়কে মা ও ছেলের রিকশার গতিরোধ করে রাসেল ও তার বাবা।
তৎক্ষণাৎ হ্যাপীকে টেনেহিচড়ে রিকশা থেকে নামায় তারা। পরে প্রকাশ্যে বেদম মারধর করার এক পর্যায়ে শ্বশুর হাসান বালী হ্যাপীকে জাপটে ধরে রাখলে স্বামী রাসেল ধারালো চাকু দিয়ে স্ত্রীর বাম পায়ের রগ কেটে দেয়। এ সময় হ্যাপী ও তার শিশু ছেলে চিৎকার দেয়। এতে পথচারীরা জড়ো হলে হ্যাপীর স্বামী ও শ্বশুর পালিয়ে যায়।
তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা হ্যাপীকে উদ্ধার করে প্রথমে বানারীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
এদিকে অভিযুক্ত রাসেল দাবি করেন, তার স্ত্রী একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত। শনিবার সকালে ব্যাগ ভর্তি কাপড় নিয়ে হ্যাপী বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তাকে ছেড়ে অন্য পুরুষের সঙ্গে সুখের ঘর যাতে না বাঁধতে পারে সেজন্য পঙ্গু করতে পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে।
তবে যৌতুকের বিষয়টি অস্বীকার করেন ও একাই স্ত্রীর পায়ের রগ কাটেন বলে দাবি করেন রাসেল