মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম
বর্তমানে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস‘র বিচারক। আইন বিশ্লেষক, গবেষক ও কলামিষ্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় আইন ও বিচার সম্পর্কে নিয়মিত কলাম লেখেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোনো বিচারপ্রার্থী যেন হয়রানির শিকার না হন এবং ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হন, সে বিষয়ে জনগণকে নিশ্চয়তা দিতে চেয়েছিলেন, যার প্রতিফলন ১৯৭২ সালের সংবিধানে প্রত্যক্ষ করা যায়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধু সারাক্ষণ ভাবতেন কীভাবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সাজাবেন। এর মধ্যে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ‘সংবিধান’ নিয়ে ভাবনা ছিল অন্যতম। বিশেষ করে স্বাধীন বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থা কেমন হবে তা নিয়ে তৎকালীন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সাথে একাধিকবার আলোচনা করেন। শোষণমুক্ত যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু তার দীর্ঘ সংগ্রাম ও রাজনীতিতে দেখেছিলেন, তার প্রতিফলন সংবিধানে নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তিনি একটি শক্তিশালী বিচারব্যবস্থা দেখতে চেয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের প্রণীত সংবিধানে তার স্বপ্নের সেই প্রতিফলনও ছিল, যেখানে স্বাধীন ও শক্তিশালী বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।
বিচার বিভাগ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তার গভীরতা বিভিন্ন সময়ে তার বক্তব্যের মধ্যে প্রতিভাত হয়েছিল। সবার জন্য ন্যায়বিচার, মামলার যেন দীর্ঘসূত্রতা তৈরি না হয় এবং আইনের চোখে সবাই যেন সমান হয়, সেসব বিষয়ের গুরুত্ব তিনি সংবিধানে দিতে বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আদালতে যাতায়াত অর্থ ও সময়ের অপচয়।’ এ বিষয়টি উল্লেখ করে শক্তিশালী ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দিয়েছিলেন তিনি।
সংবিধান যেকোনো দেশের শাসনযন্ত্র পরিচালনার মূল আইন। লিখিত অথবা অলিখিত যে প্রকৃতিরই হোক না কেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় দেশের সাংবিধানিক দিকনির্দেশনা ব্যাপক তাৎপর্য বহন করে। সংবিধানের আলোকেই একটি দেশের নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ এবং সংসদ বা আইনসভা পরিচালিত হয়। সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, মৌলিক অধিকার, সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগে দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে। সংবিধানের এই ভাগে বর্ণিত সব মৌলিক অধিকারই বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত এবং এসব অধিকার রাষ্ট্রের জন্য অবশ্যপালনীয়। দেশের কোনো নাগরিকের এসব মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে কী প্রতিকার পাওয়া যাবে, সে সম্পর্কেও সংবিধানে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া আছে। এছাড়া সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সম্পর্কে বলা হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধানে লিপিবদ্ধ কিছু বিষয় রয়েছে যা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দলিলে মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত হলেও বাংলাদেশে মানবাধিকার হিসেবে অবশ্য পালনীয় নয়।
বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগে ২৬ থেকে ৪৭ নং অনুচ্ছেদে দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে প্রণীত এসব অধিকার নিচে লিপিবদ্ধ করা হলো: আইনের চোখে সকলে সমান এ বিষয়টি বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।’
আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকারই মূলত অ্যাকসেস টু জাস্টিস বা বিচারে প্রবেশাধিকার। রাষ্ট্রীয় এই ব্যবস্থাপনায় সকল নাগরিকের সমান প্রবেশাধিকার (অ্যাকসেস টু জাস্টিস) নিশ্চিত করা এবং সকলে যেন এসব অধিকার বাধাহীনভাবে ভোগ করতে পারে তার নিশ্চয়তা প্রদান করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। Access to Justice এর বিষয়ে বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, ‘আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যেকোনো স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষত আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।’
১৯৭০ এর দশকে Italian Jurist Mauro Cappelletti একটি রিসার্চে বলেন, কার্যকর Access to Justice এর উদ্ভব হয় নতুন নতুন সামাজিক অধিকারের সাথে। কার্যকর বা ফলপ্রসূ Access to Justice দেখা যায় মৌলিক প্রয়োজন হিসেবে, মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে যা আইনগত অধিকার নিশ্চিত করে।
১৯৪৮ সালের Universal Declaration of Human Rights (UDHR)-এ স্পষ্টভাবে বলা আছে যে, সব মানুষ আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং কোনো বৈষম্য ব্যতিরেকে প্রত্যেকেই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। উক্ত ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, কাউকে খেয়াল-খুশিমতো গ্রেপ্তার বা আটক করা যাবে না এবং নিরপেক্ষ ও প্রকাশ্য শুনানির মাধ্যমে উপযুক্ত আদালত কর্তৃক বিচার পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির থাকবে। এই ঘোষণায় আরও বলা আছে যে, কোনো ব্যক্তি উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত নির্দোষ ব্যক্তির ন্যায় আচরণ পাওয়ার অধিকারী হবে।
Commonwealth of Independent States Conventions on Human Rights and Fundamental Freedoms ১৯৯৫ অনুযায়ী বিচার প্রক্রিয়ায় প্রত্যেক মানুষ সমান এবং প্রত্যেকেই স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালতে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে ন্যায় প্রতিকার পাওয়ার অধিকারী। এর অর্থ এই যে, আন্তর্জাতিক আইনে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য আইনগত সহায়তা প্রদানের বিষয়টি স্বীকৃত এবং এসব বিধান বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্র প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হবে। এছাড়া, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ দ্বারা সকল নাগরিককে আইনের দৃষ্টিতে সমান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে প্রত্যেকেই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। অনুচ্ছেদ ৩১ উক্ত বিধানকে আরও শক্তিশালী করেছে এবং ৩৩ অনুচ্ছেদ ফৌজদারি বিষয়ে জনগণের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছে। অতএব, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, বাংলাদেশ সংবিধান সর্বোত্তমভাবে প্রত্যেক জনগণের ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে।
গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো নাগরিককে গ্রেপ্তার বা আটক করা হলে ওই গ্রেপ্তার বা আটক যথাযথ হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের সংবিধানে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ৩৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘(১) গ্রেপ্তারকৃত কোন ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্র গ্রেপ্তারের কারণ জ্ঞাপন না করিয়া প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না এবং উক্ত ব্যক্তিকে তাঁহার মনোনীত আইনজীবীর সহিত পরামর্শের ও তাঁহার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাইবে না। (২) গ্রেপ্তারকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে গ্রেপ্তারের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের স্থান হইতে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ব্যতিরেকে হাজির করা হইবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ব্যতীত তাঁহাকে তদতিরিক্তকাল প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না। (৩) এই অনুচ্ছেদের (১) ও (২) দফার কোন কিছুই সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না,
‘(ক) যিনি বর্তমান সময়ের জন্য বিদেশী শত্রু, অথবা (খ) যাঁহাকে নিবর্তনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইনের অধীন গ্রেপ্তার করা হইয়াছে বা আটক করা হইয়াছে। বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষণ বিষয়ে সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী কোন ব্যক্তিকে অপরাধ সংঘটনের সময়ে কার্যকর বা চালু ছিল না এমন কোন অপরাধের দায়ে বিচারের মুখোমুখী করা যাবে না বা কোন ব্যক্তিকে কোন আইন লংঘনের জন্য এমন কোন দণ্ড প্রদান করা যাবে না যে দণ্ড অপরাধ সংঘটনকালে বলবৎ ছিল না।
সংবিধানের ৩৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, “(১) অপরাধের দায়যুক্ত
কার্যসংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এইরূপ আইন ভঙ্গ করিবার অপরাধ ব্যতীত কোন
ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে না এবং অপরাধ-সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে
যে দন্ড দেওয়া যাইতে পারিত, তাঁহাকে তাহার অধিক বা তাহা হইতে ভিন্ন দন্ড
দেওয়া যাইবে না। (২) এক অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারীতে
সোপর্দ ও দন্ডিত করা যাইবে না। (৩) ফৌজদারী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক
ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা
ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকারী হইবেন।
‘(৪) কোন অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে
বাধ্য করা যাইবে না। (৫) কোন ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাইবে না কিংবা
নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাইবে না কিংবা কাহারও সহিত
অনুরূপ ব্যবহার করা যাইবে না। (৬) প্রচলিত আইনে নির্দিষ্ট কোন দণ্ড বা
বিচারপদ্ধতি সম্পর্কিত কোন বিধানের প্রয়োগকে এই অনুচ্ছেদের (৩) বা (৫) দফার
কোন কিছুই প্রভাবিত করিবে না।”
মৌলিক
অধিকার বলবৎকরণ করতে বাংলাদেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে স্বীয় মৌলিক
অধিকার রক্ষার সুযোগ দিয়েছে। কারও মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে আদালতের মাধ্যমে
তা বলবৎ করা যায়। বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৪ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “(১) এই
ভাগে প্রদত্ত অধিকারসমূহ বলবৎ করিবার জন্য এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের
(১) দফা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের নিকট মামলা রুজু করিবার অধিকারের
নিশ্চয়তা দান করা হইল।
(২) এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না
ঘটাইয়া সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোন আদালতকে তাহার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার
মধ্যে ঐ সকল বা উহার যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দান করিতে পারিবেন।”
বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক কল্যাণ রাষ্ট্র। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে বীজ রোপিত হয়েছিল তা ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টির মাধ্যমে পূর্ণতা পায়। জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করে নবগঠিত রাষ্ট্রের সূচনা হয়। ত্রিশ লাখ শহীদের তাজা রক্ত এবং দুই লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জনকারী এ রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একটি শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা; যেখানে সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক-সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত করা হবে।
কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসাবে সকল নাগরিকের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে ন্যায়বিচার পাওয়া কারও দয়ার ওপর নির্ভরশীলতা নয়-ব্যক্তির অধিকার এবং রাষ্ট্রকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যেতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী, পুরুষ, ধনী, দরিদ্রনির্বিশেষে জনগণ যদি আইন-আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করতে না পারে, তাহলে সেক্ষেত্রে আইনের শাসন অর্থহীন হয়ে পড়ে। আর তাই জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রম প্রান্তিক গ্রাম থেকে শহর সবখানে জোরদার করা প্রয়োজন।
বর্তমানে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার সরকার জাতীয়ভাবে আইনগত সহায়তা প্রদান করে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। এখন যদি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি দেশি-বিদেশি সংস্থা, সুশীল সমাজ ও জনগণ এগিয়ে আসে, তাহলে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী বিচারে প্রবেশাধিকার (Access to Justice) ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
লেখক: আইন বিশ্লেষক ও কলামিস্ট। ইমেইলঃ bdjdj1984du@gmail.com