আব্দুম মুনিব, কুষ্টিয়া
এবার সরকারি হাসপাতালে মিলেছে করোনা’র জাল সনদ। করোনা টেস্ট’র স্যাম্বল না নিয়েই করোনার নেগেটিভ রেজাল্ট বিক্রির অভিযোগে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালায় কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ একটি দল। বুধবার দুপুর ১টা থেকে রাত পর্যন্ত চলে এই অভিযান। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট (ইপিআই) মাহফুজুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি মিরপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া এলাকার মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, পাবনার রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকুরীর জন্য করোনা নেগেটিভ রেজাল্ট নিতে হচ্ছে। ওই চাকরী প্রার্থীদের কয়েকদিন ধরেই মিরপুর হাসপাতাল থেকে ভুয়া করোনা নেগেটিভ সনদ দিয়ে আসছিলো মাহফুজুর রহমান। এর জন্য নেওয়া হচ্ছিল ৭শ- ১৫শ টাকা। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গোপনে এ খবর পেয়ে মিরপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় দুপুর ১টায় মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালায়। ৫ ঘন্টার অভিযান শেষে আটক করা হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট (ইপিআই) মাহফুজুর রহমানকে। এসময় তার কাছ থেকে একটি কম্পিউটারের হার্ডডিক্স, একটি পেনড্রাইভ এবং একটি স্ট্যাম সিল ও ১৩টি নেগেটিভ করোনার ভুয়া সনদের ফটোকপি জব্দ করা হয়। এ অভিযান চলাকালে হাসপাতালের ছবি ও ভিডিও নিতে গণমাধ্যম কর্মীদের বাধা দেন মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জেসমিন আরা।
কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, করোনার পরীক্ষার জন্য নমুনা না নিয়েই নেগেটিভ রেজাল্ট দিচ্ছে এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তারাা মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালায়। এসময় মাহফুজুর রহমান নামের একজনকে জিজ্ঞাসা বাদ করা হয়। এ ঘটনায় কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বাদী হয়ে মিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জনের দেওয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা মাহফুজুর রহমানকে আটক করি। এসময় তার কাছ থেকে একটি কম্পিউটারের হার্ডডিক্স, একটি পেনড্রাইভ, এবং একটি স্ট্যাম সিল ও ১৩টি নেগেটিভ করোনার ভুয়া সনদের ফটোকপি জব্দ করা হয়।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন সময়ে কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবের তথ্য সমম্বীত ফরমেট ব্যবহার করে ভুয়া করোনার সনদ দিয়ে আসছিলো মাহফুজুর রহমান। যারা প্রতারণার মাধ্যমে এভাবে করোনার সনদ দেবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন অসাধু চিকিৎসক এবং কর্মচারীর সমন্বয়ে একটি চক্র এ ধরনের কর্মকান্ড করোনার শুরু থেকেই করে আসছে।
আব্দুম মুনিব
কুষ্টিয়া