রাসেল হোসাইন ,বরগুনা প্রতিনিধিঃ বরগুনার তালতলীতে শ্রম বিক্রির হাট জমজমাট। ৪০ বছর ধরে চলছে বিকিকিনি। ববিরার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ভূমি অফিসের সামনে মানুষের ভিড়। তারা বরগুনা,পটুয়াখালী,বরিশাললের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে আসা অভাবী মানুষ। সপ্তাহে ১ দিন হাট হওয়ায় সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত শ্রমজীবী মানুষের হাট বসে এখানে,তারা হাটে আসে বিক্রি হতে। আবার আরেক শ্রেনীর মানুষ আসে তাদের কিনতে। চলতে থাকে অন্যান্য পণ্যের মতো দর কষাকষি। একবার বাড়ে, আরেকবার কমে। এক পর্যায়ে বিভিন্ন পণ্যের মতোই বিক্রি হয় তারা। এখানকার স্থানীয়রা তাদের বলে দিনমজুর, আবার কেউ বলে কামলা।
হাটের দিন ৭০ বছরের বৃদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের শ্রমজীবী মানুষ তাদের এলাকায় কোনো কাজ না থাকায় দলে দলে ছুটে আসেন উপজেলার তালতলী বাজারের মানুষ বিক্রির হাটে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা ক্রেতারা কাজের জন্য শ্রমজীবীদের এখান থেকে কিনে নিয়ে যায়। মৌসুম শুরু হলেই এখানে শ্রমিক ও ক্রেতাদের ভিড় জমে ওঠে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। জমি চাষ, ধান রোপণসহ নানা কাজে শ্রমিকদের দরদাম করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ করতে শর্তসাপেক্ষে কিনে নেন জমির মালিক ক্রেতা-গৃহস্থরা। দাঁড়িয়ে থাকেন ক্রেতার আশায়। তবে ধানকাটা মৌসুমের সময় বেচাকেনার ধুম পড়ে যায়। ৪, ৮ ও ১০ জনের গ্রুপে ভাগ হয়ে দল বেঁধে জড়ো হন শ্রমিকরা। দরকষাকষি হয় সবকিছু
ঠিকঠাক হলে ক্রেতার সঙ্গে তারা চলে যান। বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বাড়লে শ্রমের দাম বেড়ে যায়।
কথা হয় কাজের সন্ধানে আসা পটুয়াখালী থেকে আসা আঃ রহমান হাওলাদারের সাথে, এসেছি পেটের দায়ে নিজেদের শ্রম বিক্রিতে এলাকায় কাজকর্ম নেই, অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয় পরিবার-পরিজন নিয়ে। থাকতে হয় ক্রেতার বাড়িতে। গৃহস্থ বাড়িতে তিনবেলা খাবার জোটে। প্রতিদিন ৬০০ টাকা করে পারিশ্রমিক জোটে।৫-৬ বছর ধরে তিনি আসেন এ হাটে। প্রতি মৌসুমে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বাড়িতে পাঠাতে পারেন।
এ বিষয়ে তালতলী বাজার ব্যবসায়ী সমতিরি সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবীউল কবির জোমাদ্দার বলেন, আমরা ছোট কাল থেকেই দেখে আসছি তালতলীতে শ্রম বিক্রির হাট,প্রতি রবিবার জমির হাল চাষ করার জন্য এখানে যাদের শ্রমিক প্রয়োজন তারা শ্রমিক কিনে নিয়ে যান ।