তালহা জাহিদঃ করোনা মহামারীর মধ্যেও নানা রকম উদ্যোগ গ্রহণ করে ভোলার বিচারপ্রার্থীদের বিচারিক সেবা প্রদানে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে ভোলা বিচার বিভাগ। ভোলার জেলা ও দায়রা জজ ড. এ.বি.এম. মাহামুদুল হক এর প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় ও সহযোগিতায় করোনা মহামারীর শুরু থেকেই ভোলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ সানাউল হক আদালত সংশ্লিষ্ট সকলকে সুরক্ষিত রাখতে জীবানুনাশক স্প্রেয়ার, কাপড়ের মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজার ইত্যাদি সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
ইতোমধ্যে আদালতের মূল প্রবেশদ্বারে স্থাপন করা হয়েছে হাত ধোয়ার বেসিন, আদালত ভবনের প্রবেশদ্বারে সেন্সরযুক্ত অটোম্যাটিক জীবানু ছিটানোর যন্ত্র। ভার্চুয়াল শুনানীর শুরু থেকেই যাতে আইনজীবীগণ শুনানীতে অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং বিচারপ্রার্থীগণ উপকৃত হন সেজন্য তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে বিজ্ঞ আইনজীবীদের কারিগরি সহায়তা করেন। সব ধরনের জরুরী বিষয়াদীর শুনানীর ব্যবস্থা করেন। ফলে দেশের বিভিন্ন বার ভার্চুয়াল প্লাটফরমের বিরোধিতা করলেও ভোলা আইনজীবী সমিতি এ ক্ষেত্রে শুরু থেকেই সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং জেলা ও দায়রা জজ ড. এ.বি.এম. মাহামুদুল হক এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ সানাউল হক এর আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ‘ভূয়সি প্রশংসা করে এবং ধন্যবাদ জানিয়ে’ রেজুলেশন গ্রহণ করেন।
কিন্তু ইতোমধ্যে জেলা ও দায়রা জজ করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকলেও শারীরিক উপস্থিতে আসামীদের আত্মসমর্পণ এবং মামলা দায়ের করার নির্দেশ জারী হলে ভোলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ সানাউল হক সংশ্লিষ্টদের সুরক্ষার জন্য আরো কিছু অভিনব পদক্ষেপ করেন। এর মধ্যে রয়েছে এজলাসে সাক্ষীর ডকসহ ড্রপলেট প্রতিরোধী শ্নিজগার্ড স্থাপন, আসামীর স্বীকারোক্তি গ্রহণ ও নির্যাতনের শিকার নারী-শিশুদের জবানবন্দি গ্রহনের জন্য শ্নিজগার্ডসহ বিশেষ ডেস্ক স্থাপন করেন। ফলে ঝুকিমুক্ত থেকে পুলিশ কর্তৃক সোপর্দকৃত আসামীর জামিন ও রিামন্ড শুনানী এবং প্রয়োজনীয় জবানবন্দি গ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলার আদালতে শ্নিজগার্ডসহ বিশেষ ডেস্ক স্থাপন বিষয়ে ‘ভোলা মডেল’ অনুসরণ করা হয়েছে।
সর্বশেষ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সকল আদালতের মামলার দৈনিক কার্যতালিকা প্রর্দশনের জন্য এজলাসের বাইরে ০২টি ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এজলাশ কক্ষে প্রবেশ না-করে কিংবা প্রচলিত দৈনিক কার্যতালিকার সংস্পর্শে না-এসেই এই ডিসপ্লে বোর্ডে থেকে যে কেউ তার মামলার শুনানীর তারিখ ও সময় জানার পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত আদেশ জানতে পারছেন। এতে এজলাস কক্ষে শুানানীকালে কিংবা আদালতের সর্বাধিক ব্যবহৃত দৈনিক কার্যতালিকার সংস্পর্শ থেকে করোনা সংক্রামনের যে ঝুকি ছিল, তা অনেকাংশেই এড়ানো যাচ্ছে এবং কোন রকম হয়রানীর সুযোগ থাকছে না। ফলে বিচারপ্রার্থী এবং বিচারসংশ্লিষ্ট সকলেই ব্যপকভাবে উপকৃত হচ্ছেন এবং এই অভিনব উদ্ভাবনের জন্য প্রসংশা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।