এপিএস আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
বেজিং দক্ষিণ চিন সাগরকে তাদের নৌ-সাম্রাজ্য হিসেবে দেখাতে চাইলেও তা মানবে না বিশ্ব।
আজ ঠিক এই রকম কড়া ভাষাতেই দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে বেজিংয়ের ভূমিকাকে আক্রমণ করলেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো। ওয়াশিংটনে তাঁর দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমস্ত মিত্র দেশের সার্বভৌম অধিকার রক্ষার্থে তাদের পাশে রয়েছে আমেরিকা। তাদের সমুদ্রপথে স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখার লড়াইয়েও শরিক আমেরিকা।’
চিন প্রসঙ্গে মার্কিন সচিবের এই বক্তব্য ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। চিন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে স্থলসীমান্তের পাশাপাশি সমুদ্রপথেও সংঘাত গভীর হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। ভারত মহাসাগরে চিনের সহায়তায় পাকিস্তান ভারত-বিরোধী পরিকাঠামো তৈরি করছে। চিনের থেকে উন্নত মানের সাবমেরিন-সহ বেশ কিছু উচ্চ প্রযুক্তির নৌযুদ্ধের উপকরণ পাচ্ছে ইসলামাবাদ। চিনের পাশাপাশি ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তারাও ঘাঁটি গাড়ার চেষ্টা করছে বলেই খবর। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একের পর এক দ্বীপ দখল করা এবং অন্যান্য দেশের নৌবানিজ্যে বাধা দেওয়া নিয়ে চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বেজিংয়ের সংঘাত গত কয়েক বছর ধরেই চলছে।
চিনের সঙ্গে কার্যত যুদ্ধংদেহি অবস্থান নেওয়া ট্রাম্প প্রশাসন সমুদ্রপথে চিনকে আটকাতে বেশ কিছু দেশের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ভারত। গোটা বিষয়টি নিয়ে ভারত কিছুটা দ্বিধায় ছিল এত দিন। কিন্তু গত মাসে গালওয়ানে রক্তপাতের পরে চিন সম্পর্কে নয়াদিল্লির মনোভাব বদলেছে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। আর তাই নৌ-সেনার যৌথ উদ্যোগে আমেরিকার সঙ্গে ভারত কতটা সামিল হয়, এখন সেটাই দেখার।
আজ পম্পেয়ো তাঁর বিবৃতিতে স্পষ্ট বলেছেন, “একটা কথা পরিস্কার জানিয়ে দিতে চাই, গোটা দক্ষিণ চিন সাগরের উপকূলবর্তী সম্পদের মালিকানা চায় চিন। যেটা সম্পূর্ণ বেআইনি।’’ তাঁর কথায়, “সবার সম্মিলিত স্বার্থ আজ চিনের অভূতপূর্ব হুমকির মুখে। বেজিং ভয় দেখাচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উপকূলবর্তী রাষ্ট্রগুলিকে। গা জোয়ারি করে তাদের সম্পদ থেকে বঞ্চিত করছে। আন্তর্জাতিক আইনকে হঠিয়ে ‘জোর যার মুলুক তার’ নীতি নিচ্ছে। ২০১০ সাল থেকেই তাদের আচরণ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সে সময় আসিয়ান সম্মেলনে তৎকালীন চিনা বিদেশমন্ত্রী বলেছিলেন, চিন বড় দেশ। অন্যরা ছোট দেশ এবং এটাই সত্য। আজকের একুশ শতকে চিনের এই মানসিকতার কোনও স্থান নেই।’’ আনন্দ বাজার