সোহাগ মাহমুদ খান: এই করোনা মহামারীর মধ্যেও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহ জেলার সর্বত্র ছেলেরা হিজড়া সেজে বাটপারি ও কিছু হিজড়ার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ ও যাত্রী সাধারন । তাদের চাঁদাবাজির কারণে অনেক জায়গায়ই লাঞ্চিত হচেছ অনেক ভদ্র পরিবার।লোক লজ্জার ভয়ে অনেক সময় চুপ করে নিরবে সয়ে যান অনেকে। আবার অনেকে প্রতিবাদও করেন। প্রতিবাদকারীদের সাথে হিজরাদের আচরণ হয়ে যায় একেবারেই অশালিন।বিশেষ করে বিয়েসহ যে কোন অনুষ্ঠান হলেই সে স্থানে তাদের আগমন হয়ে যায় এক প্রকার ক্যাডারের মত।এ সব অনুষ্ঠানে হাজার টাকার নিচে দিলেই শুরু হয় বচসা।
জানা যায়, সাধারণ মানুষের সহানুভূতি, সহযোগিতা ও সহায়তার ওপর নির্ভর করেই চলে হিজড়া সম্প্রদায়ের জীবনযাপন। তবে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে দোকানিদের ওপর হামলে পড়া, বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠান, বাসাবাড়িতে নবজাতকের আগমনের খবরে দলবলে হাজির হয়ে পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায়, যৌন প্রতারণা, যে কোন বিনোদনস্থানে কাউকে জিম্মি করে অবাঞ্ছিত দৃশ্যের অবতারণা করে সর্বস্ব লোপাট – এমন বহু অভিযোগ হিজড়াদের কয়েকটি দলের বিরুদ্ধে রয়েছে। হিজড়ারা বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নামে বিভক্ত হয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি করছেন। গেল কয়েক মাস ধরে তাদের মাত্রাতিরিক্ত অসদাচরণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন নগরবাসী।
কুষ্টিয়া শহরতলির উদিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা তারেক রহমান জানান, কিছুদিন পূর্বে আমার একটি পুত্রসন্তান হয়েছে হিজড়ারা আমার বাড়িতে এসে আমার কাছে ৪০০০ টাকা চাদা দাবি করে।টাকা দিতে রাজি না হলে, হিজরা তার নিজের শরীরের কাপড় চোপড় খুলে ফেলার হুমকি দেয়। জিম্মি করে অর্থ নিয়ে যায় হিজরারা। বলতে লজ্জা হয় তারপরেও বলছি সময় সময় মনে হয়, আমরা হিজরাদের হাতে জিম্মি হয়ে আছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
কুষ্টিয়া পোড়াদহ রেলওয়ে স্টেশন এলাকার হিজড়াদের নেতা জানান, সরকার যে টাকা দেয় সেটা খুবই কম। আল্লাহ হিজড়া বানাইছে। কোন কর্মে আমাদের নেওয়া হয় না। সাধারণ ভাবে জীবন যাপন করতে গেলেও মানুষ তাকিয়ে থাকে। হাসাহাসি করে। পরিবার থেকেও আলাদা, কী করবো বলেন ? বেঁচে থাকার জন্য তো ভাত কাপড় প্রয়োজন। তাই জোড় করি না, যে যা দেয় খুশি হয়ে তাই নেই। তবে সব জায়গায় যেমন ভাল নেই ঠিক তেমনি আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যেও সবাই ভাল না। তবে কিছু চাঁদাবাজ হিজড়ার জন্য তো আমরা সবাই দোষী হতে পারি না।
এদিকে শহর তলীর বটতৈল বাইপাস মোড়ে রাত হলেই সেখানে হিজড়া সেজে কিছু যুবক ট্রাক চালক, ও বিভিন্ন যাত্রী সাধারনকে নানাভাবে হুমকী ধাকমী দিয়ে চাদা আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন ট্রাক চালক ও স্থানীয় হোটেল মালিকরা। এ ছাড়া সন্ধ্যার পর থেকে সেখানে হিজড়া সেজে মাদক চালিয়ে যাচ্ছে ওই কতিপয় যুবক। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী যুবকের আশ্রয়ে তারা এ ভাবে মাদক ব্যবসা ও বাটপারি করলেও কেউ কিছু বলার সাহস পাইনা বলে জানান স্থানীয় কয়েকজন দোকানদার।