বানারীপাড়া প্রতিনিধিঃ বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় অটোরিকশার ধাক্কায় পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেলের লুকিং গ্লাস ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির সহ সভাপতি মো. জামাল হোসেনকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) রিয়াজ হোসেন ও কনস্টেবল শফিকুল ইসলামকে বানারীপাড়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশলাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।এ ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) রিয়াজ হোসেন ও কনস্টেবল শফিকুল ইসলামকে বানারীপাড়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশলাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে বাখরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার সাঈদ সরেজমিন পরিদর্শন শেষে রাত সাড়ে ১১টায় তাদের বরিশাল পুলিশলাইনে সংযুক্ত করার এ নির্দেশ দেন।বানারীপাড়া থানার শিশির কুমার পাল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, সোমবার সকালে এসআই রিয়াজ হোসেন ও কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম থানা থেকে সিসি নিয়ে বরিশাল পুলিশলাইনে সংযুক্ত হবেন।জানা গেছে, রোববার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পৌর শহরের ২নং ওয়ার্ডের হাজারীবাড়িসংলগ্ন সড়কের পাশে থানা পুলিশের কনস্টেবল মো. শফিকুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলটি রেখে কথা বলছিলেন।
এ সময় সেখানে মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. জামাল হোসেনের একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এসে ওই মোটরসাইকেলটির ওপর সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলটি সড়কের ওপর পড়ে লুকিং গ্লাস ভেঙে যায়।এ নিয়ে পুলিশ কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম ও মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. জামাল হোসেনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।পরে খবর পেয়ে এসআই রিয়াজ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে জামাল হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় তারা দুজনে জামাল হোসেনকে থানার মূলগেটে ও ওয়ারলেস অপারেটরের রুমে নিয়ে বেদম মারধর করে আটক রেখেছেন বলে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়।বিচার না পেলে তাদের পক্ষ থেকে পর দিন আজ সকালে বৃহত্তর বরিশালের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধের আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেয়া হয়।এর পর জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ওই দিন সন্ধ্যায় বাখরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার সাঈদ বানারীপাড়া থানায় সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন।এ সময় তিনি আহত মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. জামাল হোসেন ও পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. কালামসহ অভিযুক্ত দুই পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পুরো ঘটনাটি জেনে এসআই রিয়াজ হোসেন ও কনস্টেবল শফিকুল ইসলামকে পুলিশলাইনে সংযুক্ত করার ঘোষণা দেন।তার এ ঘোষণায় সন্তুষ্ট হয়ে বরিশাল জেলা মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়ার পাশাপাশি সোমবার সকাল থেকে সড়কে মাহিন্দ্রা-আলফা চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
এ সময় থানার অফিসার ইনচার্জ শিশির কুমার পাল, ওসি (তদন্ত) মো. জাফর আহম্মেদ ও জেলা মাহিন্দ্রা-আলফা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।এ বিষয়ে বরিশাল মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির সভাপতি মো. দুলাল হোসেন তালুকদার জানান, বানারীপাড়ায় দুই পুলিশ একটি তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. জামাল হোসেনকে বেদম মারধর করে গুরুতর আহত করেছে।বর্তমানে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।দুলাল বলেন, পুলিশ আমাদের কোনো রকম ত্রুটি পেলেই সড়কে মারধর করবে এ বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ বিষয়ে বানারীপাড়া থানার ওসি শিশির কুমার পাল জানান, মাহিন্দ্রা-আলফা শ্রমিক নেতা জামাল হোসেনের সঙ্গে দুই পুলিশের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক।ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশে বাখরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার সাঈদ শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অভিযুক্ত দুই পুলিশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।