উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৪৩তম অধিবেশনে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে আনা ওই প্রস্তাবে ৪৭ সদস্যবিশিষ্ট মানবাধিকার পরিষদের মাত্র দুটি দেশ বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। ওই দেশ দুটি হলো ফিলিপাইন ও ভেনিজুয়েলা। বাংলাদেশসহ ৩৭টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ভারত, নেপাল, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, অ্যাঙ্গোলা, ক্যামেরুন, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও সেনেগাল—এই আটটি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান না নিয়ে ‘অ্যাবস্টেইন’ ভোট দিয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, চীন, রাশিয়ার মতো দেশ যারা এ ধরনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে থাকে তারা বর্তমানে মানবাধিকার পরিষদের সদস্য নয়। ভারতসহ কিছু দেশ ‘কান্ট্রি স্পেসিফিক’ (সুনির্দিষ্টভাবে কোনো দেশের বিষয়ে) প্রস্তাবের বিরোধিতা করে থাকে। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রস্তাবগুলোতে ভারত সরাসরি ‘না’ ভোটের বদলে ‘অ্যাবস্টেইন’ ভোট দিয়ে আসছে।
জেনেভা থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, গৃহীত প্রস্তাবে মিয়ানমারকে মানবাধিকারবিষয়ক আইন পুরোপুরি মেনে চলা এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ নিশ্চিত করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রস্তাব গ্রহণকালে জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক বিবেচনায় নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সাময়িক আশ্রয় দেন। তবে, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে সসম্মানে ও স্বেচ্ছায় নিজ জন্মভূমিতে তাদের ফিরে যাওয়ার মাধ্যমেই এই আন্তর্জাতিক সমস্যার স্থায়ী ও গ্রহণযোগ্য সমাধান সম্ভব।
গৃহীত প্রস্তাবে জোরপূর্বক-বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের প্রত্যাবাসন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারির ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে আহ্বান জানানো হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুসারে, উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে নিজেদের আবাসস্থলে ফেরত যেতে উৎসাহিত করতেও মিয়ানমারকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার আওতায় তদন্ত অব্যাহত ও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।