বিজ্ঞাপন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খবর প্রকাশ বাবদ চীন গত চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যমগুলোতে প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এমনটি জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডেইলি কলার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নিয়ন্ত্রণে থাকা চীনের ইংলিশ ভাষায় প্রকাশিত একটি পত্রিকা ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টকে ৪৬ লাখ ডলার প্রদান করেছে। এছাড়া আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে প্রায় ৬০ লাখ ডলার প্রদান করেছে । মার্কিন এই দুই সংবাদমাধ্যমই চীনের ওই সংবাদপত্রে প্রকাশিত ‘চায়না ওয়াচ’ নামের একটি সাপ্লিমেন্ট অর্থের বিনিময়ে ছাপিয়ে দিতো। ওই সাপ্লিমেন্টে চীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাব নিজেদের মতো করে খবর প্রকাশ করতো।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি সাপ্লিমেন্টের হেডলাইনে লেখা হয়, শুল্ক বাড়ানোর প্রভাব পড়বে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ির ক্রেতাদের ওপর। ওই সংবাদে বলা হয়, মার্কিন সরকার যদি চীনের পণ্যের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ির দাম বেড়ে যাবে।
মার্কিন বিচার বিভাগের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ওই সংবাদপত্র বিজ্ঞাপন বাবদ মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে ৫০ হাজার ডলার, ফরেইন পলিসিকে ২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, দ্য দেস মইনেস রেজিস্টারকে ৩৪ হাজার ৬০০ ডলার এবং সিকিউ-রোল কলকে ৭৬ হাজার ডলার অর্থ প্রদান করেছে। এছাড়া দ্য লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস, সিয়াটল টাইমস, দ্য আটলান্টা জার্নাল-কন্সটিটিউশন, দ্য শিকাগো ট্রিবিউন, দ্য হাউসটন ক্রনিকেল এবং দ্য বোস্টন গ্লোবও চীনের ওই সংবাদপত্রের কাছ থেকে অর্থ পেতো। জানা গেছে, দ্য লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস ছাপানো বাবদ চীনের ওই পত্রিকা থেকে প্রায় ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৫২৩ ডলার অর্থ নিয়েছে।
জানা গেছে, মার্কিন সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন বাবদ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ওই সংবাদমাধ্যম প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ ২ হাজার ৬২৮ ডলার খরচ করেছে। এছাড়া টুইটারে বিজ্ঞাপনেও ২ লাখ ৬৫ হাজার ৮২২ ডলার অর্থ খরচ করেছে চীনের ওই সংবাদমাধ্যম।
মার্কিন গণমাধ্যম অর্থ খরচের বিষয়টি এমন সময় প্রকাশ পেলো যখন করোনা নিয়ে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। করোনা ভাইরাস ছড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ চীনকে দায়ী মনে করে। তবে চীনের সরকারি কর্মকর্তারা করোনা ভাইরাস ছড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমাদেশগুলোকে দোষারোপ করতে চাচ্ছিলেন। আর এ বিষয়টি নিয়ে চীনের বিভিন্ন গণমাধ্যমের ওপর গভীর তদন্ত চালানোর পরই মার্কিন সংবাদমাধ্যমে অর্থ খরচের বিষয়টি উঠে আসে।এর আগেও গণতন্ত্রপন্থী দলগুলো সতর্ক করে বলেছিল যে চীন মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে প্রপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
এপিএস/১১জুন/পিটিআই/এনএস