সু চির সরকারকে উৎখাতের প্রায় পাঁচ মাসের মাথায় বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে অবস্থান স্পষ্ট করেছেন মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। চীনা ভাষার স্ফিংস টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘মিয়ানমারের আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ না হলে সেখানে বিবেচনার কী আছে? আমি মনে করি না, বিশ্বের এমন কোনো দেশ আছে যারা নিজেদের শরণার্থী আইনের বাইরে গিয়ে শরণার্থী গ্রহণ করবে।’
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নয়—এমন ইঙ্গিত করে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পর আদমশুমারিতে ‘বেঙ্গলি’, ‘পাকিস্তানি’ ও ‘চিটাগাং’ শব্দ যোগ করা হয়েছিল। কিন্তু ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি আমরা কখনো মেনে নিইনি।”
স্ফিংস টেলিভিশনে প্রকাশিত সাক্ষাত্কারের পূর্ণ বিবরণী বিশ্লেষণ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মিয়ানমারের ‘জান্তা নেতার’ ওই বক্তব্য রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরায় অনিশ্চয়তার ছায়া ফেলছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সু চির সরকারকে উত্খাত করে ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথম সাক্ষাত্কার দিলেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি ওই নেতিবাচক মন্তব্য করেন। তবে কি রোহিঙ্গাদের পক্ষে আন্তর্জাতিক চাপ কোনো কাজে আসেনি? এ প্রশ্নের জবাবেও তিনি বলেন, চাপে কাজ হবে না।
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের অধীন সামরিক বাহিনী সু চির সরকারকে উত্খাত করে, সেদিনই নবনির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যদের শপথ নেওয়ার কথা ছিল। সেই সপ্তাহেই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া শুরু করতে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ছিল। মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর নতুন সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাঁরাও মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দ্রুত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়ার ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে আশ্বাস দিয়েছেন।