চলমান বিধিনিষেধে মুভমেন্ট পাস ছাড়াই চলাচল করতে পারবেন দেশের আইনজীবীরা। তাদের পরিচয়পত্র থাকলেই চলবে। রোববার (১৮ এপ্রিল) সকালে পুলিশ সদর দফতর থেকে পুলিশ চেকপোস্টে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের ওয়ারলেসে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়, আইনজীবীদের চলাচলে মুভমেন্ট পাসের প্রয়োজন নেই। মুভমেন্ট পাস ছাড়াই চলাচল করতে পারবেন। তবে তাদের সংশ্লিষ্ট পরিচয়পত্র ব্যবহার করতে হবে।
এর আগে, দেশের আইনজীবীদের মুভমেন্ট পাসের আওতামুক্ত ঘোষণা করে নির্দেশনা জারির জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবর আবেদন করেছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
আইজিপি বরাবর পাঠানো আবেদনে বলা হয়েছিল, আপনাকে এই মর্মে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে যে, পুলিশ বাহিনী আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করেন আর আইনজীবীরা দেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় আইনগত সহায়তা প্রদান করেন।
আইনজীবীদের আইনের ভাষায় ‘অফিসার অব দ্য কোর্ট’ বলা হয়ে থাকে। তাই বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন পুলিশ কর্তৃক আটকদের বিভিন্ন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে প্রেরণ করা হলে আসামির আইনগত সহয়তায় আইনজীবীদের প্রয়োজনীয়তা আছে।
এক কথায় করোনার ভয়াল সংক্রমণে ও আইনজীবীরা দেশের নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার এ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মৃত্যুর ঝুঁকি মাথায় নিয়ে আদালতে সশরীরে এসে আইনগত লড়াই করে, করোনার ফ্রন্ট লাইনে কাজ করে যাচ্ছেন।
আবেদনে বলা হয়, লকডাউন চলমান থাকলেও দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ, সকল মহানগর দায়রা জজ আদালতসহ সকল সিএমএম, সিজিএম কোর্ট সীমিত পরিসরে চলমান রয়েছে।
ফলে প্রতিনিয়ত মামলা ফাইলিং, জামিন আবেদন দাখিল, ওকালতনামা দাখিল, জামিনামা দাখিলে আইনজীবীদের পেশাগত কাজে আদালতে যেতে হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় আদালতে যাওয়ার সময় রাস্তায় পুলিশ কর্তৃক আইনজীবীদের জেরার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অপদস্ত হতে হচ্ছে।
মুভমেন্ট পাসের অজুহাতে আইনজীবীদের আত্মসম্মান বিসর্জন দিতে হচ্ছে। যা দেশের আইনজীবীদের জন্য অনভিপ্রেত ও অপমানজনক। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, দেশের একটি জাতীয় পত্রিকার একটি খবরে দৃষ্টিগেচর হয়েছে, যাতে আইনজীবীদেরকে মুভমেন্ট পাসের আওতামুক্ত রাখা হয়নি।
বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে সারা দেশে চলছে লকডাউন। কাজে ও চলাচলে আরোপ করা হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। তবে ব্যাংক, শিল্পকারখানা ও হাসপাতালে কাজ চলছে। জরুরি সেবা খাতগুলোও খোলা রয়েছে। কারা বের হতে পারবেন, কারা পারবেন না, এ নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝির ঘটনাও ঘটছে। পুলিশ এমন অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, যারা জরুরি সেবার আওতায় পড়েছেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিধিনিষেধের আওতামুক্ত ব্যক্তি কারা ও প্রতিষ্ঠান কোনগুলো তা পুলিশ সদর দফতর জানিয়েছে। জানিয়েছে, তাদের চলাচলে মুভমেন্ট পাস প্রয়োজন নেই। শুধু পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করতে পারবেন তারা।
আবেদনে চেকপোস্টে যেসব পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্রিফ করার জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।