সাম্প্রতিক সেনা অভ্যুত্থানে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আদেশ মানতে অস্বীকার করে কয়েকজন পুলিশ অফিসার পরিবারকে নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের কাছে তাদের ফেরত চাইল মিয়ানমার।
ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েক দিন আগে ওই পুলিশ কর্মকর্তারা ও তাদের পরিবার সীমান্ত অতিক্রম করে।
এক চিঠির বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের’ দোহাই দিয়ে কর্মকর্তাদের ফেরত চেয়েছে জান্তা সরকার।
গত মাস থেকে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে মিয়ানমার জুড়ে গণ বিক্ষোভ ও ধর্মঘট চলছে। ইতিমধ্যে কমপক্ষে ৫০ জন বিক্ষোভকারী নিহত ও আহত হয়েছেন অসংখ্য।
শনিবারও দেশটি ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে বিক্ষুব্ধ জনতাকে দমানোর চেষ্টা করে।
ভারতের মিজোরামের এক ডেপুটি কমিশনার রয়টার্সকে জানান, তারা মিয়ানমারের ফালাম জেলা থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন। সেখানে বলা হয়, আটজন পুলিশ কর্মকর্তার সীমান্ত অতিক্রমের খবর রয়েছে তাদের কাছে। প্রতিবেশী দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে তাদের যেন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ভারতীয় ওই কর্মকর্তা জানান, তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশের অপেক্ষায় আছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, পুলিশ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারসহ ৩০ জনের একটি দল আশ্রয়ের সন্ধানে মিয়ানমারের সীমান্ত অতিক্রম করে।
ভারতীয় কর্মকর্তার বরাত দিয়ে শনিবার এএফপি জানায়, সীমান্ত অতিক্রমের আশায় আরও মিয়ানমারের নাগরিক অপেক্ষা করছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট ইউ উইন মিন্টসহ ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) আরও কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে আটক করে ক্ষমতা দখল করে।
গত নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চির এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে যদিও এর সপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি।
সু চি (৭৫) দেশটির বিচ্ছিন্ন রাজধানী নেইপিদোতে আটক রয়েছেন বলে জানা গেছে। সেনাবাহিনী এর আগে তাদের কয়েক দশক ক্ষমতায় থাকাকালে এই রাজধানী নির্মাণ করে।
অভ্যুত্থান ও সহিংসতার কারণে আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনার মুখে রয়েছে মিয়ানমার। নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। কিন্তু ক্ষমতা দখলকারীরা এখনো নিজেদের সিদ্ধান্তে দৃশ্যত অটল।