জাতিসংঘের কথায়, সেনা অভ্যুত্থানের এক মাস পর বুধবার ‘সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন’ দেখল মিয়ানমার। এদিন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ৩৮ জন নিহত হয়েছে।
মিয়ানমারের জাতিসংঘের দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনার বলেছেন, দেশটি থেকে একের পর এক হতবাক করা ফুটেজ আসছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, রাবার ও লাইভ বুলেট দিয়ে সরাসরি গুলি করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
ক্রিস্টিন জানান, অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ জন নিহত ও অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছে।
একটি ভিডিও ক্লিপের কথা উল্লেখ করেন তিনি, যেখানে একজন নিরস্ত্র মেডিকেল স্বেচ্ছাসেবককে পেটাচ্ছে পুলিশ। অন্য একটিতে এক বিক্ষোভকারীকে গুলি করা হয়, তিনি সম্ভবত রাস্তায় মারা যান।
অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে জানান, বিক্ষোভকারীদের দিকে নাইন এমএম মেশিনগান থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনসহ একাধিক শহরে সামান্য সতর্কতা দিয়ে বিক্ষোভে সরাসরি গুলি করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, নিহতদের মধ্যে ১৪ ও ১৭ বয়সী দুই কিশোর রয়েছে। ১৯ বছরের এক নারীর মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমার জুড়ে গণ বিক্ষোভ চলছে।
তাদের দাবি, সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে ও বন্দী সরকার প্রধান অং সান সু চি-সহ নির্বাচিতদের মুক্তি দিতে হবে।
অভ্যুত্থান ও বিক্ষোভ দমনে সহিংসতা নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ থাকলেও মিয়ানমারের সেনারা তা বরাবরই অগ্রাহ্য করে যাচ্ছে।
বুধবারের ঘটনায় শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের ডাক দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ইতিমধ্যে একাধিক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আনা যুক্তরাষ্ট্রও বলেছে, তারা মিয়ানমার সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।
প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে সেনাদের সংযত হওয়ার আহ্বানের পরদিনই ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটল।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের নেতা পোপ ফ্রান্সিস। আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।