যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরে শপথ নিতে যাচ্ছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
শপথ নিতে ওয়াশিংটনে পৌঁছে বাইডেন প্রথমে লিংকন মেমোরিয়ালে করোনাভাইরাসে প্রাণ হারানো চার লাখ আমেরিকানকে স্মরণ করেন।
এ সময়ে পাশে ছিলেন স্ত্রী জিল বাইডেন, কমলা হ্যারিস ও তার স্বামী ডাগলাস এমহফ।
একই সঙ্গে তিনি আবারও চার বছরের বিভক্তি শেষে দেশের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
বাইডেন বলেন, কখনো কখনো স্মরণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু জাতির জন্য এমন স্মরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার আরও ২ হাজার ৪৮২ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
এদিকে প্রেসিডেন্টের অভিষেককে ঘিরে সাধারণত বড় ধরনের জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কিন্তু এবার করোনা এবং ৬ জানুয়ারি পার্লামেন্ট ভবনে হামলার পর তেমনটি আর হচ্ছে না।
গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে দেখা যাইনি। কিন্তু আগে থেকে রেকর্ড করা বিদায়ী ভাষণে ট্রাম্প তার নীরবতা ভেঙেছেন।
এ প্রথমবারের মতো তিনি আমেরিকানদের আসন্ন প্রশাসনের সফলতার জন্য প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা কেবল সূচনা মাত্র।
ট্রাম্প এখন পর্যন্ত নির্বাচনে তার পরাজয় স্বীকার কিংবা জয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাননি।
যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্য অনুযায়ী বিদায়ী প্রেসিডেন্ট নতুন প্রেসিডেন্টকে ওভাল অফিসে চা চক্রে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান। ট্রাম্প এক্ষেত্রেও দীর্ঘদিনের রীতি ভাঙলেন। এছাড়া বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে না থাকার ঘোষণাও তিনি আগেই দিয়েছেন।
এদিকে সোমবার প্রকাশিত এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার রেকর্ড সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে। আর কোনো বিদায়ী প্রেসিডেন্ট এত কম জনপ্রিয়তা নিয়ে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেননি।
ওয়াশিংটন ডিসিতে শপথ নিতে আসার আগে বাইডেনকে মঙ্গলবার তার নিজ শহর উইলমিংটনে অশ্রুসিক্ত বিদায় জানানো হয়।
এ সময় বাইডেন তার ২০১৫ সালে মারা যাওয়া সন্তান বিউকে স্মরণ করেন। বিউ উদীয়মান রাজনীতিক ছিলেন। তিনি মস্তিষ্কের ক্যান্সারে ৪৬ বছর বয়সে মারা যান।
বাইডেন অশ্রুভেজা কণ্ঠে বলেন, ‘আমার একটাই দুঃখ, আজ সে এখানে নেই।’
ডেমোক্রেটি পার্টির অভিজ্ঞ ও দীর্ঘদিনের সিনেটর ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট বাইডেন ওয়াশিংটনে আসার পথে মঙ্গলবার স্ত্রী জিলকে নিয়ে ব্লেয়ার হাউসে অবস্থান করেন। হোয়াইট হাউসের বাইরে রাষ্ট্র প্রধান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আবাসস্থল এই ব্লেয়ার হাউস।
অভিষেক প্রস্তুতির সঙ্গে জড়িত সূত্রে জানা গেছে, বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের ভাষণ ২০ থেকে ৩০ মিনিটের হবে। এ ভাষণের মধ্যদিয়ে তিনি সকল আমেরিকানের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন।
তার এ নতুন চেতনার প্রতীক হিসেবে তিনি বুধবার শপথ নেওয়ার আগে গির্জায় প্রার্থনার জন্য সঙ্গী হতে শীর্ষ দুই সিনেটর ডেমোক্র্যাট চাক শুমার ও রিপাবলিকান মাইক ম্যাককনেলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ম্যাককনেল আমন্ত্রণে সাড়া দেবেন বলেও জানা গেছে।