তালহা জাহিদ, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চারদিকে যখন নারী ধর্ষণের প্রবণতা চলছে হারহামেশ। ঠিক তখনি উঠে আসলো বলাৎকারের কথা। ভিবিন্ন প্রতিষ্ঠানে হচ্ছে বলাৎকারের মত ভয়াবহ অপরাধের মহড়া। দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ ধারায় প্রয়োজনীয় সংশোধন করে ছেলেদের বলাৎকারকে ‘ধর্ষণ’ হিসেবে গণ্য করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ নোটিশ পাঠান।
একইসঙ্গে আলিয়া মাদ্রাসা এবং কওমি মাদ্রাসাগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নারী শিক্ষক নিয়োগ, বিশেষত শিশুদেরকে নারী শিক্ষক দিয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষক কর্তৃক ক্রমবর্ধমান ছাত্র ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে। দেশে দুই ধরনের মাদ্রাসা শিক্ষা পদ্ধতি যেমন- আলিয়া মাদ্রাসা এবং কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক। এসব মাদ্রাসায় প্রায় কোটির কাছাকাছি ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে। এই মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার্থীরা পুরুষ শিক্ষকদের অধীনে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই মাদ্রাসাগুলোতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবের কারণে এসব কোমলমতি ছাত্ররা ধর্ষণসহ বিভিন্ন যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তাদের শিক্ষকের কাছে। এসব যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের ফলে অনেক ছাত্র মৃত্যুর মুখেও ঢলে পড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এসব ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।’
‘আবার প্রচলিত আইনে পুরুষের সঙ্গে পুরুষের জোরপূর্বক যৌনসঙ্গমকে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। ফলে এ ধরনের যৌনসঙ্গমের শাস্তি অনেক কম থাকায় মাদ্রাসার শিক্ষকরা এ সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে।’
তাই নোটিশ পাওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে এসব বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নোটিশ প্রদান কারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, মাদ্রাসাগুলোতে অধিকাংশ শিক্ষার্থী এতিম এবং সমাজের বঞ্চিত শিশু-কিশোররা পড়াশোনা করে থাকে। এ কারণে তাদেরকে নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটলেও তাদের বিষয়ে আইনগত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ বা সামাজিকভাবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো তেমন কাউকে দেখা যায় না। ফলে অপরাধীরা এ ধরনের জঘন্য এবং ঘৃণ্য অপরাধ করেও অতি সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতি কোনো সভ্য সমাজে কোনোভাবেই কাম্য নয়। কর্তৃপক্ষের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।