এপিএস আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
রা্জ্যর সমস্ত পুজো প্যান্ডেলে দর্শকদের ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। অতিমারি পরিস্থিতিতে আদৌ পুজো করার অনুমতি দেওয়া সঙ্গত কি না তা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় সোমবার হাইকোর্ট রাজ্যের সমস্ত পুজো প্যান্ডেলকে ‘নো এন্ট্রি’ জোন হিসাবে ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ কী ভাবে এবং কতটা মানা হল, তা হলফনামা হিসাবে লক্ষ্মীপুজোর পর আদালতকে জানাতে হবে রাজ্যকে। রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে ওই আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে ওই হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এ দিন সরকার পক্ষের হয়ে সওয়াল করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং মামলাকারীর আইনজীবী ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর আদালত নির্দেশ দেয়, ছোট-বড় সমস্ত মণ্ডপের চারপাশে ৫ থেকে ১০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত ব্যারিকেড করে দিতে হবে। ‘নো এন্ট্রি’ ঘোষণা করতে হবে সেই ব্যারিকেড করা অংশকে। সেখানে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পুজোর প্রয়োজনে যাদের ঢুকতে হবে, মণ্ডপের বাইরে তাঁদের নামের তালিকা টাঙিয়ে রাখতে হবে। মণ্ডপের ভিতর ১৫ থেকে ২৫ জনের বেশি ঢুকতে দেওয়া হবে না। ঢুকতে দেওয়া যাবে না ওই তালিকার বাইরেও কাউকে। এই দূরত্ববিধি মানার দায়িত্ব নিতে হবে পুলিশ এবং পুজোর উদ্যোক্তাদের।
হাইকোর্টে ওই মামলার শুনানির সময় এ দিন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আজকের খবরের কাগজে যে ছবি দেখেছি, তা আশঙ্কা তৈরি করেছে।” তাঁর মন্তব্য, ‘‘অতিমারি রোখার যে গাইডলাইন রয়েছে, তাতে সদিচ্ছার অভাব নেই। কিন্তু বাস্তবে তার কোনও প্রয়োগ নেই। রাজ্যে তৃতীয়া থেকে পুজোর গাইডলাইন চালু হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসন তাদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে সেই নির্দেশ পালন করবে। কিন্তু পুলিশের সংখ্যা কি পর্যাপ্ত?” বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘কলকাতা শহরে ৩ হাজার পুজো রয়েছে। পুলিশ রয়েছে ৩০ হাজার। সংখ্যা বৃদ্ধি করলেও বড় জোর ৩২ হাজার। সেই সংখ্যার পুলিশ দিয়ে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে, তদন্তের কাজ সেরে আদৌ পুজো সামলানো কতটা সম্ভব?”
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, পড়ুয়ারা এত শৃঙ্খলাবদ্ধ, তারা ছ’মাস স্কুল কলেজে যায়নি। তার মধ্যে এই জীবন সঙ্কটে কী ভাবে দুর্গাপুজো সেলিব্রেশন হচ্ছে? এ প্রসঙ্গে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘পুলিশকে দোষ দেওয়া যায় না। তাদের সংখ্যার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বাজারে ভিড় হচ্ছে। সেটার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যায় না। সাধারণ মানুষ ভার্চুয়াল কভারেজ দেখুন।’’
হাইকোর্টের এই রায়ের পর মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা প্রতিটি মণ্ডপকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষণা করতে আবেদন করেছিলাম। সেখানে আদালত নো এন্ট্রি জোন করার নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশকে এটা কার্যকরী করতে হবে।” আনন্দ বাজার