করোনার জেরে নতুন বায়োসিকিওরটি বা নিরাপত্তামূলক আইন করল চীনে। এই আইন অনুযায়ী দেশটির যে কোনো প্রান্তে যে কোনো ধরনের সংক্রামক রোগ বা মহামারির প্রাদুর্ভাব ঘটলে বা সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিলে যে কোনো নাগরিক তা রিপোর্ট করতে পারবে প্রশাসনের কাছে। তথ্য ভুল হলেও সেই ব্যক্তি বা সংস্থাকে শাস্তি দেয়া হবে না।
ডয়চে ভেলে অনলাইন জানিয়েছে, করোনার সংক্রমণ রোধে ব্যর্থতার জন্য চীনকে দোষারোপকে করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মহল।
দেশের ভেতরেও করোনার সংক্রমণ এবং ছড়িয়ে পড়া নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে চীনা সরকারকে। যে চিকিৎসক প্রথম করোনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন, তার মৃত্যু সাধারণ নাগরিকদের নাড়া দিয়েছিল। দেশের বাইরে গিয়ে বেশ কিছু গবেষক চীনের ব্যর্থতা নিয়ে সোচ্চার হন।
এই পরিস্থিতিতে নতুন আইনটি পাস করল চীন। নতুন আইনে কয়েকটি বিষয় খুব স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। দেশের যে কোনও প্রান্তে যে কোনও ধরনের নতুন অসুখ, সংক্রমণ অথবা মহামারির আশঙ্কা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে তা প্রশাসনকে জানাতে হবে।
সাধারণ নাগরিক, কোনও সংস্থা, গবেষক- যে কেউ রিপোর্ট করতে পারেন। যদি কোনো কারণে রিপোর্টের তথ্য ঠিক না হয়, তা হলেও রিপোর্টকারীকে শাস্তি দেওয়া হবে না। আর যদি রিপোর্ট সত্য হয়, তা হলে রিপোর্টকারীকে পুরস্কৃত করা হবে।
উহান থেকে যেভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল, তা নিয়ে যে চীনের সরকারও খুশি ছিল না, তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। চীনে করোনা সংক্রমণ যখন সব চেয়ে বেশি তখন দেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, উহানের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধানকেও বরখাস্ত করা হয়েছিল। প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে, যে পদ্ধতিতে পুরোনো কর্মকর্তারা করোনার মোকাবিলা করেছেন, তা যথেষ্ট নয়।
ফেব্রুয়ারিতেই চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বলেছিলেন, বায়োসিকিওরিটির জন্য নতুন আইন তৈরি করা হবে। শেষ পর্যন্ত সেই আইন পাস হলো দেশটির পার্লামেন্টে।
এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, করোনা গোটা বিশ্বে চীনকে খানিকটা হলেও কোণঠাসা করে দিয়েছে। চীনা গবেষকেরা দেশের বাইরে গিয়ে করোনা নিয়ে নানা তথ্য প্রকাশ করছেন। যা চীনকে আরো সমস্যায় ফেলছে। বায়োসিকিওরিটির প্রশ্নে তথ্য ফাঁস করার বিষয়টি আইনে আছে কিনা, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।